নিজের গাড়ির শখ কার নেই? ছোট্ট একটি গাড়িতে করে ছুটির দিনে পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে অনেকেরই। কিন্তু সাধ থাকলেও সাধ্য থাকে না। দ্রব্যমূল্যের বাজারে গাড়ির দামও উত্তরোত্তর বাড়ছে। তারসঙ্গে রয়েছে মেইনটেন্যান্স খরচা। সেই কারণে অনেকেই পুরনো গাড়ি কেনার দিকেই ঝুঁকছেন মধ্যবিত্তরা।
একথা ঠিক, অনেকটা কম দামেই পাওয়া যায় পুরনো গাড়ি। কিন্তু তাতে যে খুব একটা সুরাহা হয় এমনটা কিন্তু নয়। কারণ,গাড়ির মেইটেন্যান্সেই বেরিয়ে যায় অনেক টাকা। কোনও পার্টস খারাপ হলেই বিপদ, মেরামত করতে গাড়ি মালিককের পকেট ফাঁক হওয়ার জোগাড়। তাহলে কী করণীয়?
পুরনো গাড়ি কেনার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তাহলেই লাভবান হতে পারেন আপনি। কিন্তু কোন কোন বিষয়গুলি দেখে নেওয়া জরুরি? জানুন-
গাড়ির হিস্ট্রি- কোনও পুরনো গাড়ি কেনার আগে অবশ্যই সেই গাড়ির হিস্ট্রি চেক করা দরকার। আগে কতজন ক্রেতা ছিল, গাড়িতে কোনও আইনি সমস্যা রয়েছে কিনা অথবা গাড়ির পরিপ্রেক্ষিতে কোনও জরিমানা রয়েছে কিনা সেই বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া জরুরি।
ইঞ্জিনের ইমিশন স্ট্যান্ডার্ড- পুরনো গাড়ি কেনার আগে অবশ্যই ইমিশন স্ট্যান্ডার্ড (BS) জানা জরুরি। এটি হল কেন্দ্রীয় সরকারের পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড এই স্ট্যান্ডার্ড স্থির করে। কোনও গাড়ি থেকে পলিউশনের মাত্রার উপর নির্ভর করে BS স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণ করা হয়। BS স্ট্যান্ডার্ডের উপর নির্ভর করে পুরনো গাড়ি বাতিল করা হয়। সুতরাং গাড়ি কেনার আগে অবশ্যই সেই গাড়ির BS স্ট্যান্ডার্ড জানা জরুরি।
মোট কিলোমিটার- পুরনো গাড়ি কেনা হলে সবথেকে জরুরি বিষয় হল সেই গাড়িটি কত কিলোমিটার যাত্রা হয়েছে। কারণ গাড়ি যত বেশি যাত্রা করে ততই ইঞ্জিনের ক্ষমতা কমতে থাকে। সেই কারণে বেশি পুরনো গাড়়ি উচিত নয়।
হুইল কন্ডিশন- গাড়ি যত পুরনো হয় সবথেকে বেশি নষ্ট হয় সেই গাড়ির টায়ার। রাস্তায় নিয়মিত ঘর্ষণের ফলে টায়ার ক্ষয় হতে শুরু হয়। অন্যদিকে একটি টায়ারের দামও যে খুব কম এমনটা নয়। সেইকারণে হুইল কন্ডিশন অবশ্যই দেখা জরুরি। পাশাপাশি অ্যালয় হুইল রয়েছে কিনা সেটাও জেনে রাখা জরুরি।
ইন্টেরিয়র- ইন্টারন্যাল কন্ডিশন যেমন দেখা জরুরি তেমন ইন্টিরিয়রও দেখা খুবই জরুরি। গাড়ির ভিতরে থাকে একাধিক এলিমেন্ট। যেমন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, স্টিয়ারিং, ক্ল্যাচ-ব্রেক-এসলেটর প্যাড,এয়ারব্যাগ ইত্যাদি। প্রতিটি এলিমেন্টই জরুরি গাড়ি চালানোর জন্য। সেই কারণে গাড়ির ইন্টিরিয়রে সব ঠিকঠাক রয়েছে কিনা জেনে নেওয়া দরকার।
ইঞ্জিন কন্ডিশন- দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চালানো হলে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা জরুরি। তা না হলে ইঞ্জিন অতি দ্রুত কার্যক্ষমতা হারায়। গাড়ি বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রতি ৬ মাস অন্তর অথবা নির্দিষ্ট কিলোমিটারের পর গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা জরুরি।
গাড়ির বডি- প্রতিটি গাড়ির সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে তার বডিতে। সেই কারণে গাড়ির কোথাও কোনও স্ক্রাচ থাকলে তা গাড়ির পক্ষে বেমানান। দেখতেও খারাপ লাগে। সেই কারণে পুরনো গাড়ি কেনার সময় গাড়ির বডি ভালো করে নজর দিন।