অফিসের বস কেমন? ভাল? কাজের জন্য চাপ দেন? কখন কোন কাজ করছেন, কতোটা ফাঁকি দিচ্ছেন? কখন ডেস্ক ছেড়ে উঠলেন, বা ডেস্কে বসেই সহকর্মীর সঙ্গে একটু ঠাট্টা ইয়ার্কি করলেন, বা মুঠোফোন ঘেঁটে চারটে রিল দেখে বন্ধুদের গ্রুপে শেয়ার করলেন, সব দিকেই কড়া নজর আপনার বসের? আর এমন কড়া বসের চোখ এড়িয়ে অফিসের মাঝে একটু আনন্দ করে নিতে পারলেই সেদিনের জন্য গোটা দুনিয়া আপনার হাতে! কী তাই তো? কিন্তু, আপনি কর্মী হলে, আপনার জন্য খারাপ খবর। আর আপনি যদি বস হন, আপনার পোয়া বারো! খারাপ খবরটা আপনি যাদের বস, তাঁদের জন্য। এখন থেকে সারাদিনে অফিসে আপনি কতোটা কাজ করলেন, সেই হিসেব আর বসকে রাখতে হবে না। কাজটা করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কামাল নিয়ে এত দিনে দিস্তে দিস্তে প্রতিবেদন লেখা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক যে কাজটা এআই পেয়েছে, সেটা যেন জনপ্রিয় রিয়ালিটি শোয়ের বিগবসের কাজ। অফিসের সব কর্মী কে কতোটা কাজ করলেন, কে ফাঁকি দিলেন, কতোটা ফাঁকি দিলেন সব ধরা পড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্যামেরায়।
সফটওয়্যারের নাম ডিস্টোপিয়ান। এর মাধ্যমে শুধু যে কর্মীর দক্ষতা বিচার করা হচ্ছে, তা নয়। কোন কর্মীর ছাঁটাই দরকার, তাও বলে দিচ্ছে এআই! বসের চোখে ধুলো দেওয়া সম্ভব! কিন্তু এআই-এর চোখে? নাহ। কর্মীর ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের মাউসও ট্র্যাক করছে সেই সফটওয়্যার। একটা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ডেস্কটপের স্ক্রিনশট নিয়ে রাখছে। সমস্ত কর্মীর কাজের তুলনামূলক বিচার তো করছেই, কোন কর্মী কত দ্রুত কাজ করতে পারছেন, কে ধীরে কাজ করেন, সব হিসেব করে ফেলছে সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
কারোর ল্যাপটপ ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড থেমে থাকলে নোট করে নেওয়া হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়। সোম থেকে বৃহস্পতি বার পর্যন্ত খুব মন দিয়ে কাজ করেছেন আপনি, দুর্দান্ত পারফরম্যান্স! শুক্রবার উইকেন্ডের মুডে, কাজে একটু ঢিলে দিয়েছেন, সেই হিসেবও রাখছে ওই সফটওয়্যার। সারা দিনে আপনি ক'টা মেল করলেন, কী কী মেল করলেন, কাকে কাকে পাঠালেন, সব হিসেব রাখছে সফটওয়্যার। দু-একটা ভুলচুক হলেও রেয়াদ করা হচ্ছে না কর্মীকে। বরং, কর্মীর ছাটাইয়ের বিধান দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি, রেডিটে একজন সেই প্রোডাক্টিভিটি মনিটরিং সফটওয়্যার-এর অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেই মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ভরে গিয়েছে ইন্টারনেট। অনেকেই বলছেন, একজন দক্ষ কর্মীও যদি কোনও গভীর চিন্তা করতে গিয়ে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড মাউস না নাড়ান, ধরে নেওয়া হবে তিনি কোনও কাজ করছিলেন না? এ তো সাংঘাতিক ব্যাপার!