নিটের প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে কয়েকদিন ধরেই জলঘোলা চলছে। তদন্তে উঠে এসেছে ডার্ক ওয়েবে ফাঁস হয়েছিল প্রশ্ন। কিন্তু এই ডার্ক ওয়েব বিষয়টি কী? কীভাবে সেখান থেকে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়েছিলেন পরীক্ষার্থীরা? জেনে নিন পুরো বিষয়টি।
যে ইন্টারনেট আমরা সাধারণভাবে ব্যবহার করি সেটা অতল সমুদ্র বললেও কম বলা হবে। যে অংশ আমাদের সামনে থাকে তা পাহাড়ের চূড়া মাত্র। এর গভীরে রয়েছে অজানা একাধিক তথ্য।
ইন্টারনেটের তিনটি স্তর-
ইন্টারনেটের মোট তিনটি স্তর রয়েছে। সাধারণভাবে যে ওয়েবসাইটগুলি আমরা অ্য়াকসেস করি সেগুলি বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে ইন্ডেক্স করা থাকে। যেকোনও সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করার সঙ্গে সঙ্গে মুহূর্তের মধ্যে বিস্তারিত তথ্য কম্পিউটারের পর্দায় ফুটে ওঠে। ইন্টারনেটের এই অংশটির নাম সার্ফেস ওয়েব।
এর পরের স্তরটির নাম ডিপ ওয়েব। এই স্তরে যে ওয়েবসাইটগুলি থাকে সেগুলি যেকোনও ব্রাউজার থেকে খোলা গেলেও সার্চ ইঞ্জিনে INDEX হয়না। অর্থাৎ গুগল বা অন্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে ওই ওয়েবসাইটগুলি দেখা যায়না।
এর পরের স্তরটিই হল ডার্ক ওয়েব। সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের এর অভিজ্ঞতা হয়না। সাধারণ ব্রাউজারের মাধ্যমে ডার্ক ওয়েব খোলা যায়না। টর ব্রাউজার দিয়েই ইন্টারনেটের এই স্তর বা ডার্ক ওয়েব অ্য়াকসেস করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।
কারা ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করেন?
পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন বেআইনি ওয়েবসাইট অ্য়াকসেস করতে গেলে ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করা হয়। মূলত বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্ম হয় ডার্ক ওয়েবে। অভিযোগ সেখানেই ছড়িয়েছিল NEET এর প্রশ্ন। এমনটাই দাবি তদন্তকারীদের। তবে শুধু অপরাধীরা নয়, ইনভেস্টিকেটিভ জার্নালিস্টরা বিভিন্ন কাজের জন্যও ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করেন।
ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করবেন কীভাবে?
ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করার জন্য Tor বা 12P ব্রাউজারই একমাত্র উপায়। এই ব্রাউজার ব্যবহার করলেই IP অ্য়াড্রেস গোপন থাকবে। ফলে অপরাধমূলক কাজ করলেও গোপন থাকবে ইউজারের পরিচয়।
ডার্ক ওয়েবে কি ঢোকা উচিত?
ব্যক্তিগত ফোন বা ল্যাপটপ থেকে ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করা উচিত নয়। অপরাধমূলক কাজকর্ম যেমন হয় তেমন ওৎ পেতে থাকে অপরাধীরা। লগ-ইন ক্রেডিন্সিয়াল সহ যাবতীয় তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। সেকারণে ডার্ক ওয়েব অ্য়াকসেস করা উচিত নয়। পাশাপাশি প্রচুর ম্যালওয়ার থাকে ইন্টারনেটের এই স্তরে। যা কম্পিউটারের জন্য ক্ষতিকারক।
কোন কোন বিষয়ে তথ্য মিলতে পারে ডার্ক ওয়েবে?
নর্টনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অতি গোপন তথ্য সহ একাধিক বিষয়ের তথ্য মিলতে পারে ডার্ক ওয়েবে। তার মধ্য রয়েছে-
১) ক্রেডিট, ডেবিট কার্ডের নম্বর
২) লগ ইন ক্রেডিনসিয়াল
৩) ড্রাগ
৪) অস্ত্র
৫)পর্নগ্রাফি
৬) গোপন তথ্য
৭) নকল পাসপোর্ট
৮) ম্যালওয়ার
তদন্তকারীদের ধারণা, ডার্ক ওয়েবেই ছড়িয়ে পড়েছিল NEET এর প্রশ্ন। সেখান থেকেই কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছিল গোপন ওই প্রশ্নপত্র। ইতিমধ্যে CBI এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ২ জন।