আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) হল সেই বোতলের মধ্যে বন্দি থাকা জিন, যাকে মানুষ বের করে ফেলেছে! এমনই মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রসংঘের আর্ন্তজাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের প্রধান ডোরিন বোগদান মার্টিন। তাঁর কথায়, "এখন মানবজাতিকে লড়াই করতে হচ্ছে, ছুটতে হচ্ছে সময়ের বিরুদ্ধে। কঠিন লড়াই।"
জেনেভায় শুরু হয়েছে এআই বিষয়ক আর্ন্তজাতিক আলোচনাসভা৷ যার বিষয় 'এআই ফর গুড'। তর্জমা করলে হয়, 'কল্যাণের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা'। বহুবিধ আশঙ্কার পাশাপাশি আশার কথাও উঠে আসছে বিশেষজ্ঞদের গলায়। তাঁরা বলছেন, এআই-এর সাম্প্রতিক উন্নতি অসাধারণ বললেও কম বলা হয়।
মার্টিন বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকটের মতো সমস্যা এআই সমাধান করতে পারে। তবে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষ এখনও অনলাইনের বাইরে বাঁচেন৷ এই ডিজিটাল এবং টেকনোলজিক্যাল বিভাজন ঘেচাতেই হবে।
মার্টিনের কথায়, এআই যাতে নিরাপদ থাকে তা নিশ্চিত করতেই হবে৷ নয়তো বড় বিপদ। ২০২৪ সালটি যেমন নির্বাচনের বছর৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বহু দেশে নির্বাচন। তার প্রচারপর্বে এআই এর মাধ্যমে ডিপ ফেকের ব্যবহার নজরকাড়া৷ এগুলি রুখতেই হবে।
ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক গোল্ডম্যান স্যাকসের একটি গবেষণা বলছে, চ্যাটজিপিটির মতো জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম এমন সব কনটেন্ট তৈরি করতে পারে, যার সঙ্গে মানুষের লেখা বা তৈরি করা কনটেন্টের কোনও ফারাকই থাকবে না। ফলে সে সব কাজ করার জন্য কর্মীর দরকারও পড়বে না গুচ্ছের সংস্থার।
এবং এর ফলে বিশ্বের গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট এক দশকে ৭ শতাংশ বাড়তে পারে।
এর ফলে ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই তৃতীয়াংশ চাকরি খরচের খাতায় চলে যেতে পারে। জোসেফ ব্রিগস এবং দেভেশ কোডানির হিসাব সেই কথাই বলছে। ৪৬ শতাংশ প্রশাসনিক চাকরি এবং ৪৪ শতাংশ আইন-আদালতের সঙ্গে জড়িত চাকরি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ এই সব কাজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমেই করা যাবে।
তবে বেশ কিছু সেক্টর এখনও এআই-এর পক্ষে কব্জা করা মুশকিল। আদালতের রায়দান বা অত্যন্ত অসুস্থ রোগীর চিকিৎসা এখনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর ভরসাযোগ্য নয়। নির্মাণশিল্পের মতো শ্রমসাধ্য সেক্টরও এখনও পর্যন্ত তার আওতার বাইরে।