বাংলাদেশের গর্ব পদ্মা সেতু(Padma Bridge) নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই উৎসাহে ফুটছিল গোটা দেশ। শনিবার ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল বাংলাদেশ। সেতু উদ্বোধনে এসে কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা(Bangladesh PM Seikh Hasina)। তাঁর কথায়, ‘বাংলাদেশের মানুষ আজ গর্বিত। অনেক বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়ে আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। এই সেতু শুধু সেতু নয়, শুধু ইট-সিমেন্ট-কংক্রিটের কাঠামো নয়, এই সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব। সক্ষমতার, মর্যাদার প্রতীক।’ উল্লেখ্য, ২০০১ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণের সমীক্ষা শেষ করে জাপানের(Japaneese Company) এক সংস্থা। তখনই সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।
২০১০ সাল। পদ্মার উপর একটি দোতলা সেতু তৈরির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। সেতুর নীচতলায় থাকবে রেলপথ(Rail Track in Padma Bridge)। উপরে চার লেনের চওড়া রাস্তায় ছুটবে গাড়ি। বলা হয়, রেলপথে কলকাতা থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে মাত্র ছয় থেকে সাড়ে ছয় ঘণ্টা। কিন্তু ২০১২ সালে হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে যায়। এত বড় প্রকল্প থেকে সরে গেল বিশ্বব্যাঙ্ক(World Bank)। কিন্তু স্বপ্নপূরণে বদ্ধপরিকর হাসিনা(PM Seikh Hasina) জানান, বাংলাদেশ নিজেই শেষ করবে সেতুর কাজ। অনেকে মনে করেছিলেন যা কার্যত অসম্ভব।
আরও পড়ুন- Polio Virus in London: কলকাতার পর লন্ডনেও মিলল পোলিও ভাইরাসের খোঁজ, চিন্তায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
২০১২ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ মন্ত্রিসভা জানিয়ে দেয়, নিজেদের স্বপ্ন নিজেরাই পূরণ করবে বাংলাদেশ(Bangldesh)। কেউ কেউ অবশ্য দাবি করেছেন, বিদেশি সাহায্য নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই সব দাবি-অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। শনিবার ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হল বাংলাদেশ। মাওয়া পয়েন্ট টোল দিয়ে নয়া ইতিহাস তৈরি করল বাংলাদেশ। প্রথম টোল দিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী মুজিব-কন্যা শেখ হাসিনা(Bangladesh PM Seikh Hasina)।
পদ্মা সেতুকে(Padma Bridge) জলের মধ্যে ধরে রেখেছে ৪০টি স্তম্ভ। প্রত্যেকটি স্তম্ভ তৈরি হয়েছে মজবুত পাইল ইস্পাত দিয়ে। জলের নীচে ১২২ মিটার পর্যন্ত গভীরে গিয়েছে এই স্তম্ভের ভিত। পৃথিবীর আর কোনও দেশে আর কোনও সেতুর স্তম্ভ এত গভীরে নেই। পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’ পৃথিবীর অন্য সব সেতুর চেয়ে অনেক বেশি। প্রায় ১০ হাজার টন। এই ক্ষমতায় এই সেতু রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও অনায়াসে টিকে যাবে।
২০১৪ সালে পদ্মার উপর শুরু হয় সেতু নির্মাণের কাজ। দোতলা এই পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা মোট ৪২ টি। স্প্যান সংখ্যা ৪১ টি। শেষ স্প্যানটি বসানো হয় ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। সেতু নির্মাণে যুক্ত ছিলেন প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক। গোটা প্রকল্পের জন্য মোট ৯১৮ হেক্টর জমি নেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু তৈরিতে খরচ(Padma Bridge cost) হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।