১৯৭৫ সাল, ১৫ অগাস্ট । দিনটা বাংলাদেশের জন্য এক অন্ধকার ও কলঙ্কময় অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছিল । কারণ ওইদিনই সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল । সেইসময় পরিবারের সঙ্গে ছিলেন না মুজিবরের দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন । তাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁরা । কাট টু ২০২৪ । উত্তাল বাংলাদেশ । সবরকম চেষ্টা করেও গণআন্দোলনকে দাবায়ে রাখতে পারলেন না শেখ হাসিনা । প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন । তবে, রাজনীতির কারবারিরা শুধু মনে করিয়ে দিলেন,কাকতালীয়ভাবে ৫০ বছর পর আজ আবারও একটা অগাস্ট মাস । এবার মসনদ ছাড়তে হল শেখ হাসিনাকে ।
রাজনৈতিক কারবারিরা মনে করিয়ে দিয়েছেন আরও একটি ঘটনার কথা । ২০০৪ সাল । ওই বছরই অগাস্ট মাসের ২১ তারিখ শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার অভিযোগ উঠেছিল । সেইসময় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন হাসিনা । তবে, এবার পরিস্থিতি আলাদা । একেবারে পৃথক ইস্যুতে উত্তাল বাংলাদেশ । কোটা সংস্কার নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল ওপার বাংলা । বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দিলেও ন’দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন'। বিক্ষোভকে প্রতিহত করতে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ ও আওয়ামি লীগের যৌথ হামলার অভিযোগ ওঠে । বাংলাদেশজুড়ে শুধু বোমা-গুলির শব্দ, আর রক্ত । হাসিনা সরকারের পদত্যাগ দাবিতে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ । সেই বিক্ষোভের মুখে পড়ে অবশেষে হার মানলেন শেখ হাসিনা । পদত্যাগ করলেন । কাকতালীয়ভাবে পুরো ঘটনা ঘটল সেই অগাস্টেই ।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, বাংলাদেশ সময় সোমবার বেলা আড়াইটে নাগাদ একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে গণভবন ছেড়ে বেরিয়ে যান। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন শেখ রেহানা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, দিল্লিতে যেতে পারেন শেখ হাসিনা। সূত্রের খবর, দিল্লিকে প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহার করে লণ্ডনে যেতে পারেন তিনি। সংবাদ সংস্থা ANI-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব ও বাংলাদেশে প্রাক্তন হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন স্রিঙ্গলা জানিয়েছেন, ভারত তাঁর কাছে অন্যতম সুরক্ষিত জায়গা। এদিকে, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তগুলিতেও চলছে কড়া নজরদারি।