ইলিশে পেঁয়াজ যায় না। কিন্তু ইলিশের বদলে পেঁয়াজ যেতেই পারে। ঢাকাকে এবার ঝাঁজালো জবাব ফিরিয়ে দিল দিল্লি। বাংলাদেশের মসনদ এখন আর হাসিনা নেই। নেই তাঁর শাসনকালও। তাই এই মরশুমে হয়তো আর পদ্মার ইলিশের স্বাদ পাবে না বাঙালি। কারণ, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার জানিয়ে দিয়েছে এত দামী মাছ তারা আর ভারতকে পাঠাতে পারবে না। ইলিশ নিয়ে ঢাকা এই অবস্থান নিলেও, তাদের পেঁয়াজ পাঠাতে কোনও কার্পণ্য করছে না দিল্লি। ভারত জানিয়েছে, শুল্ক অর্ধেক করেই বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি করা হবে। যাতে সে দেশের মানুষ সস্তায় পেঁয়াজ পেতে পারেন।
গত কয়েক বছরে পুজো মানেই ওপার বাংলা থেকে ভেট হিসাবে পদ্মার ইলিশ আসত এপার বাংলার বাজারে। বাজেটের বাইরে গিয়েও একবার হলেও সেই ইলিশ চেখে দেখতো বাঙালি। পুজোর নবমীর দিন ভুরভুরে গন্ধ তুলে বাঙালির হেঁশেল মাত করত সেই ইলিশ। কিন্তু এবার আর সেটি হচ্ছে না। বাংলাদেশে এখন অন্তর্বর্তী সরকার। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, তাদের কাছে দেশের মানুষের মুখে পদ্মার ইলিশ তুলে দেওয়া অগ্রাধিকার। তাই এবার ভারতে বিশেষ করে পশ্চিমবাংলাকে তারা এই মাছ পাঠাতে পারবে না।
মূলত পুজোর আগে পদ্মার ইলিশে ছেয়ে যায় বাংলাদেশের বাজার। অতিরিক্ত ৪ হাজার টন মাছ এতদিন পুজোর উপহার হিসাবে পশ্চিমবঙ্গকে পাঠাতেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এটাই হয়ে উঠেছিল দস্তর। কিন্তু এবার তা বদলে গেল। বাংলাদেশের মৎস্যমন্ত্রী ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, ক্ষমা করবেন, এবার তাঁরা ইলিশ পাঠাতে পারছেন না। আর এই নিয়ে ভারত যেন নতুন কোনও ইস্যু খাড়া না করে, তা দেখার অনুরোধ করা হয়েছে।
ইলিশ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান যাই হোক না কেন, পাল্টা পেঁয়াজ পাঠিয়ে ঢাকার দিকে নিজের বন্ধুত্বের হাত ফের বাড়িয়ে রাখল দিল্লি। ৪০ বদলে স্রেফ বাংলাদেশের জন্য ২০ শতাংশ করা হয়েছে পেঁয়াজের রফতানি শুল্ক। আর তাতেই স্বস্তি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের। কারণ, ইউনুস সরকার গদিতে বসতেই পেঁয়াজ কার্যত চোখের জলে, নাকের জলে করে দিয়েছিল বাংলাদেশের মানুষকে।