২০২০-এর আগে আর পরে। সময়টাকে যেন আড়াআড়ি ভাবে ভাগ করা যায় এই একটা সাল দিয়ে। কারণটা আলাদা করে বলে দিতে হয়না। কোভিড ১৯ প্যান্ডেমিক রতারাতি সারা পৃথিবীর ছবিটা বদলে দিয়েছিল। কোন ছবি? সামাজিক, অর্থনৈতিক, এবং আনুষঙ্গিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটেই ঘটেছিল আমূল পরিবর্তন। ৫ বছর পর ২০২৫ পড়তেই ফের জাঁকিয়ে বসছে এক আতঙ্ক। আতঙ্কের নাম HMPV। হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস। কোভিড ১৯-এর মতোই এই ভাইরাসের জন্মও চিন দেশে বলেই কি ক্রমশ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে?
নতুন বছরের দিন পাঁচেক কাটতে না কাটতেই ভারতেও খোঁজ মিলল HMPV-র। বেঙ্গালুরুতে ৮ মাসের শিশুর শরীরে মিলল হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস, তারপর কর্ণাটক এবং কলকাতার আরও দুই শিশুর শরীরেও মিলেছে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস। এই ভাইরাস নিয়ে কেন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে?
প্রথম কারণ, অবশ্যই, এই ভাইরাসের ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি এখনও। কোভিড ১৯-এর ক্ষেত্রেও করোনা ভ্যাক্সিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ ক্রমশ বেড়ছিল দারুণ দ্রুত গতিতে। এ ছাড়া এই ভাইরাসের সঙ্গে করোনার আর কি মিল?
HMPV কি একদম নতুন ভাইরাস? উত্তর হলো- না। ২০০১ সালে প্রথম এই ভাইরাসের হদিশ মেলে। আন্তর্জাতিক ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, ১৯৫৮ সাল থেকেই এই ভাইরাস রয়েছে পৃথিবীতে।
এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে?
করোনার সময় ঠিক যে ধরণের নির্দেশ দেওয়া হতো, এবারেও সেসব-ই মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
যেমন
৫ বছর আগের করোনা আতঙ্কের রেশ কিন্তু পুরোপুরি কাটেনি এই পৃথিবীর বুক থেকে। কোভিড-১৯ নাম থেকেই স্পষ্ট, ২০১৯ সালে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়াতে শুরু করে। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস। চিনের ইউহান প্রদেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ, কোভিড ১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। চিনের বাইরে সংক্রমণ ছড়াল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে। ২০২০ সালের ১১ মার্চ, কোভিড ১৯ ভাইরাসের সংক্রমণকে প্যান্ডেমিক বা অতিমারীর তকমা দিল ওয়র্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO)।
2024-এর এপ্রিল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে করোনার বলি হয়েছেন ২২৯ টি দেশের ৭০ লক্ষ ১০ হজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে ইউএসএ তে সবচেয়ে বেশি মানুষের করোনায় মৃত্যু হয়েছে, ১১ লক্ষের বেশি। তালিকায় দু নম্বরে রয়েছে ব্রাজিল। ভারত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। এ দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ লক্ষ ৩১ হজার, ৫৪৭ জনের।
2020 সালের ডিসেম্বরে এমার্জেন্সি ইউসেজের জন্য ছাড়পত্র পেল ফাইজার-বায়োটেকের করোনা ভ্যাক্সিন। পরে একে একে একাধিক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাই বাজারে আনল করোনার টিকা।
৫ বছর পর, সেই চিন দেশ থেকেই আবারও এক ভাইরাসের সংক্রমণের খবর তাই নতুন করে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে গোটা বিশ্ববাসীর। যদিও, এই মুহূর্তে প্যানিক না করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।