প্রায় ১৫০ কিলোমিটার কমছে কলকাতা থেকে ঢাকার দূরত্ব (Kolkata-Dhaka Distance)। বর্তমানে এপার বাংলা থেকে ওপার বাংলা যেতে পেরোতে হয় ৪০০ কিলোমিটার পথ। জুন মাসের শেষ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পথ পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে ঢাকা। জানা গিয়েছে, আগামী জুন মাস থেকেই সর্বসাধারণের জন্য খুলে যাচ্ছে পদ্মা ব্রিজ (Padma Bridge)।
গত ১০ বছর ধরে এই সেতু নিয়ে কাজ চলছে। সেতুটি পুরোদমে চালু হলে রেলপথে কলকাতা থেকে ঢাকা যেতে লাগবে ৬ থেকে সাড়ে ৬ ঘণ্টা। এখন রেলপথে নদিয়া পেরিয়ে গেদে যায় মৈত্রী এক্সপ্রেস Maitraiyi Express)। এরপর সীমান্ত স্টেশন দর্শনা পার করে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে ঢোকে ট্রেন। সময় লাগে প্রায় ১০ ঘণ্টা। পদ্মা সেতুতে (Padma Setu) রেললাইন হলে কলকাতা থেকে বনগাঁ জংশনে ঢুকবে ট্রেন। সেখান থেকে হরিদাস সীমান্ত দিয়ে বেনিয়াপোল, যশোর, নড়াইল, ফরিদপুর হয়ে ঢাকা ঢুকবে ট্রেন।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে ৩০ হাজার ওয়াইফাই হটস্পট চালু করবে বিএসএনএল
জানা গিয়েছে, এই পদ্মা সেতুর জন্য বাংলাদেশ ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। যা বাংলাদেশের জাতীয় উৎপাদনকে (GDP) এক ধাক্কায় ১.২ শতাংশ বাড়াবে বলে মত অর্থনীতিবিদদের। এই পদ্মাসেতু দোতলা সেতু। গোটা দুনিয়ায় এমন সেতু বিরল। একতলায় নদীর ওপর দিয়ে ট্রেন চলবে। ওপরে চার লেনের রাস্তায় চলবে গাড়ি। তবে নদীর জলস্তর বাড়লেও এর নিচ থেকে পাঁচতলা উঁচু জাহাজ যাওয়ার মতো জায়গা ছাড়া হচ্ছে। এই ব্রিজের মোট ৪০টি পিলার থাকবে। জলের নিচে ১২২ মিটার পর্যন্ত এই পিলারের ভিত তৈরি হয়েছে। গোটা বিশ্বে জলের নিচে কোনও সেতুর ভিত এত গভীর নয়।
ভূমিকম্প প্রতিরোধক ব্যবস্থাতেও এই ব্রিজ অনেকটাই এগিয়ে। ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং অন্য সেতুর থেকে অনেকগুণ বেশি। প্রায় ১০ হাজার টন। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পও এড়িয়ে যেতে পারবে এই ব্রিজ।
আরও পড়ুন: হিন্দিতে লিখে প্রথম বুকার ভারতের গীতাঞ্জলির
২০১০ সাল থেকে সেতুটির পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। এই সেতুর কাজ নিয়ে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতির কারণ দেখিয়ে প্রকল্প রূপায়ণের কাজ থেকে সরে আসে বিশ্ব ব্যাঙ্কও। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগেই প্রায় শেষের পথে এই ব্রিজ। সেতু তৈরির টেন্ডার ঘোষণা করা হয়। এক চিনা সংস্থাকে এর বরাত দেয় বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জুনে সড়কপথ খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু রেলব্রিজটি শেষ হতে আরও অনেক সময় লাগবে। সাজসজ্জাও প্রায় শেষের মুখে। সাধারণ আলোর পাশাপাশি থাকছে আর্কিটেকচারাল লাইটিংয়ের ব্যবস্থাও। সেতুর সৌন্দর্যায়নের জন্য একটি সংগ্রহশালাও তৈরি করা হয়েছে। সেখানে পদ্মা সেতু তৈরির বিভিন্ন উপকরণ প্রদর্শিত হবে।