আস্থা রাখুন, ভরসা রাখুন। ওঁর নাম ইমরান খান। ম্যাচ শেষের আগে কোনও দিন হারতে শেখেননি। উনি আমার অধিনায়ক। আমরা জানি কী ভাবে হারা ম্যাচ জিতিয়ে বিশ্বকাপ জয় করেছিলেন। তাই আজও মনে হচ্ছে ম্যাচ লাস্ট ওভার পর্যন্ত যাবে। কারণ, ওঁর নাম ইমরান খান। উনি অধিনায়ক। চ্যাম্পিয়ন। রবিবার পাক সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পা দেওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে এই কথাগুলিই টুইট করেছিলেন পাক ক্রিকেট দলে একদা তাঁর ছায়া ওয়াসিম আক্রম।
এরপর রবিবাসরীয় ইসলামাবাদে যা ঘটল, তা পাক রাজনীতিতে সেরা উপাখ্যান হয়েই হয়তো থেকে যাবে। সত্যিই তিনি চ্যাম্পিয়ন। সেই ইমরান খানই দেশকে সেনা শাসনের হাত থেকে কার্যত বাঁচিয়ে দেশের গণতন্ত্রকে আরও একবার কায়েক করার চেষ্টা করলেন। এদিন শুরু থেকেই ছিল টানটান মেজাজ। অশান্তির আশঙ্কায় চারদিকে জারি ১৪৪ ধারা। আস্থা ভোটের আগেই বিরোধীদের দিকে পাক প্রধানমন্ত্রীর ইনসুইগিং ইয়র্কার। পাঞ্জাবের গর্ভনরকে বরখাস্ত করে ওই পদে নতুন গর্ভনর হিসাবে উমর সরফরাজ চিমাকে নিয়োগ করেন ইমরান।
এরপর শুরু হয় সময় কেনার খেলা। স্পিকারকে সরানোর দাবি জানায় বিরোধীরা। ভারতীয় সময় বেলা একটা। যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে বিরোধীদের আনা পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার। বিরোধীদের আনা এই প্রস্তাবকে সংবিধান বিরোধী বলে দাবি করেন তিনি। ডেপুটি স্পিকারের এই রুলিংয়ে বেকায়াদ তখন বিরোধীরা। এরমধ্যেই ঘর গোছাতে নেমে পড়েন পাক প্রধানমন্ত্রী। সময় নষ্ঠ না সংসদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের জন্য চিঠি দেন পাক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকে।
পাক মিডিয়ার খবর, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ মেনে পাক সংসদ ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্টও। ফলে ভোটের পথে পাকিস্তান। বিরোধীদের অভিযোগ, সংবিধান বিরোধী কাজ করেছে সরকার। তাই প্রতিবাদে তারা আদালতে যাচ্ছে। কূটনৈতিক মহলের দাবি, আর্থিক সংকটে ধুঁকছে থাকা পাকিস্তানকে আরও একটা ভোটের ধকল হয়তো নিতে হবে। কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের মাস্টারস্ট্রোকে এই প্রথম সেনার গ্রাস থেকে শাসন চলে গেল। ফলে ভোটে দেবে পাকিস্তান। আর পাক সেনার হাতে এখন শুধুই পেনন্সিল।