বাংলাদেশে সনাতনী হিন্দু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে এখনও উত্তাল চট্টগ্রাম। সংবাদসংস্থা এজেন্সি ফ্রেঞ্চ প্রেসের খবর, মঙ্গলবার রাতভর সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ পুলিশকে উদ্ধৃত্ত করে সংবাদসংস্থা AFP জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম আদালতেও এই ঘটনার প্রতিবাদে সংঘর্ষ হয়েছে। সেই ঘটনায় এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত পাঁচই অক্টোবর ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ আনে বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা সরকার। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কলকাতায় এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করেছে ইসকন।
চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে রাজ্যে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর অভিযোগ, গত পাঁচই অগাস্টের পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের মাত্রা দ্বিগুণ হয়েছে। এই ইস্যুতে জামাতের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শুভেন্দু। প্রতিবাদে তাঁর নেতৃত্বে মিছিলও হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুভেন্দুর ডাকেই কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে সনাতনী হিন্দু জাগোরণ মঞ্চ।
চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে ইতিমধ্যেই ঢাকাকে কড়া বার্তা দিয়েছে দিল্লি। যেভাবে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বাড়ছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিদেশমন্ত্রক। প্রাথমিক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোন আইনে চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্রে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই ব্যাপারে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে ঢাকাকে।
এই অবস্থায় চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা জানিয়েছে, এই গ্রেফতারিকে ভুল ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। তাদের দাবি, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে ইসকনের সাধু চিন্ময়কৃষ্ণ দাস সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে। ইউনুস সরকারের বিবৃতি, হতাশা ও দুঃখের সঙ্গে সরকার লক্ষ্য করছে যে চিন্ময় কৃষ্ণের গ্রেফতারির ঘটনাকে কিছু মহল ভুলভাবে তুলে ধরছে। এটি প্রতিবেশী দুই দেশের বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার পরিপন্থী।