শান্তি ফিরছে না বাংলাদেশে। রোজই দ্রোহের ক্ষোভে জ্বলছে ঢাকা। প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনার পতনের পর এবার চাপ বাড়ছে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের উপরে। তাঁর অপসারণ চেয়ে মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। এই ঘটনায় সেনা ও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে কমপক্ষে পাঁচ জনের জখম হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। সংবাদসংস্থা এএফপির দাবি, এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ দুই।
দিন কয়েক আগে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদে এখনও ইস্তফা দেননি শেখ হাসিনা। তাঁকে এখনই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলা যাবে না। যদিও ঢাকার মসনদে এখন উপদেষ্টা সরকার। রাষ্ট্রপতির এই দাবিতে পাল্টা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় বিএনপির মধ্যে। উপদেষ্টা সরকারের কাছে রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবি করা হয়।
বাংলাদেশের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সাহাবুদ্দিনকে সরানোর সিদ্ধান্ত কার্যত নিয়ে ফেলেছে মহম্মদ ইউনিসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা সরকার। অপেক্ষা করা হচ্ছে সেনা প্রধানের। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমেরিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি দেশে ফিরলেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে সাহাবুদ্দিনের দাবিতে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল কোটা বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যেও। এই ঘটনার পর রাষ্ট্রপতিকে মিথ্যাবাদী বলে অভিযোগ করেছেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এমনকী, একই অভিযোগ ছাত্র সমন্বয়ের। শুধু রাষ্ট্রপতির অপসারণ নয়, আরও চার দফা দাবি রয়েছে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র জোটের। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠনকে জঙ্গি সংগঠন বলে ঘোষণা করার।
কিন্তু রাষ্ট্রপতির পদে সাহাবুদ্দিনের অপসারণ কী সুবিধা দিতে পারবে বাংলাদেশের ইউনিস সরকারকে ? সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের নতুন উপদেষ্টা সরকারের সঙ্গে একমাত্র যোগসূত্র রয়েছে রাষ্ট্রপতির। হাসিনা সরকারের পতনের পর উপদেষ্টা সরকার গঠনে সাহাবুদ্দিনের ভূমিকা ছিল। তিনি চেয়েছিলেন দেশে গণতন্ত্রকে অটুট রাখতে হলে এখনই সরকার গঠনের প্রয়োজন। আর সেকারণে মহম্মদ ইউনিসের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছিল উপদেষ্টা সরকার।
এই বছরের জানুয়ারি মাসে ভোট হয়েছিল বাংলাদেশে। গত অগাস্ট মাসে ঢাকার মসনদে বদলে যায় রাজনৈতিক ছবি। নতুন করে বাংলাদেশে কবে ভোট হবে, তা এখনও জানা নেই। এই অবস্থায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবি উঠছে। চাপ বাড়ছে ইউনিসের উপরেও।