কারণ যুদ্ধ, এই দুটি শব্দে এখন বুক কাঁপে তাঁদের। বিপ্লবের দেশ। সেই রাশিয়া আজ যেন রণক্লান্ত। সেই কবে থেকে শুরু হয়েছে পড়শি ইউক্রেনের সঙ্গে লড়াই। এখনও চলছে। শেষ কবে জানা নেই !
মুখে স্বীকার না করলেও, ইউক্রেনের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধের ধকল আজ রুশ অর্থনীতির উপরে। দেশের উন্নয়নে কাজ বারবার থমকে যাচ্ছে। শুধু অর্থনীতি নয়, যুদ্ধ নিয়ে পুতিন সরকারের সিদ্ধান্তে কার্যত অচল হতে বসেছে রুশ সমাজও। কী ভাবে ?
দীর্ঘ যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন শত শত সৈনিক। কেউ ছেলে, কেউ স্বামী হারিয়ে কার্যত নিঃস্ব। এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ভাবছে মস্কো। কী ভাবে সমাজ জীবনে ফের গতি আসে তার জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের থেকে পরামর্শ নিয়েছে পুতিন সরকার।
সবার একমত, তৈরি কর হোক এমনটা একটা মন্ত্রক, যারা দেশের মানুষের জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, প্রেম, যৌনতার খবর রাখবে। তাই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে মিনিস্ট্রি অব সেক্স তৈরি করার। এই মন্ত্রক তৈরির আগে দেশের মধ্যেই একটা সমীক্ষা চালিয়েছে রুশ সরকার। যেখানে উল্লেখযোগ্য ভাবে ধরা পড়েছে গত কয়েক বছরে হু হু কমেছে দেশের জনসংখ্যা।
তার কারণ হিসাবে উঠে এসেছে যুদ্ধে মানুষের মৃত্যু। যার প্রভাব সরাসরি ভাবে পড়েছে রুশ সমাজে। আর এই কারণেই দেশে যৌনতা মন্ত্রক গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মন্ত্রকের মাধ্যমে দেশের হারিয়ে যাওয়া জনসংখ্যাকে ফের ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ইতিমধ্যেই এই মন্ত্রকের গুরুত্ব পর্যালোচনা করতে তৈরি করা হয়েছে কমিটি।
মন্ত্রক তৈরির ক্ষেত্রে কমিটি সুপারিশ করেছে, উদ্দামতা নয় পরিকল্পনাকে মাথায় রেখে দেশে জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি করতে হবে। এরজন্য রাত ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দেশে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট বন্ধ রাখার কথা হয়েছে। কারণ, বিশেষজ্ঞরা মনে করে এই সময় ঘনিষ্ঠতা বাড়ানো জরুরি। পরিবার তৈরি করতে ভিত করতে হবে যুব সমাজকে। তাঁদের প্রথম ডেটের টাকা দেবে সরকার। প্রথম ডেটের জন্য মাথাপিছু পাঁচ হাজার রুবেল সরকারি সাহায্যের সুপারিশ করা হয়েছে।
জনগণের টাকায় তৈরি হবে বিশেষ হনিমুন হোটেল, যেখানে কম খরচে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতে পারবেন দম্পতিরা। পরিবার পরিকল্পনা দ্রুত শুরু করতেও যুগলদের সরকারি সাহায্য করা হবে। বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে রুশ গৃহিনীদের দিকে। সন্তানকে মানুষ করতে সরকারি সাহায্য পাবেন গৃহিনীরা।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্টের দফতরের মধ্যে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাশিয়া। আপাতত সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে মিনিস্ট্রি অব সেক্স তৈরির কাজে ব্যস্ত পুতিন সরকার। সাফল্য মিলবে কীনা, অপেক্ষায় বিশ্ব।