ক্রমশ অশান্ত বাংলাদেশ। নতুন করে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও চার সন্ন্যাসীকে। কলকাতায় ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাসের অভিযোগ, গ্রেফতার সনাতনী হিন্দু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে খাবার ও ওষুধ দেওয়ার পরেই এই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন চিন্ময়কৃষ্ণের ব্যক্তিগত আপ্ত সহায়কও। এই পরিস্থিতির মধ্যে অভিযোগ, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বেনাপোলে আটকানো হয়েছে কমপক্ষে ৫৪ জন হিন্দু সন্ন্যাসীকে। তাঁরা বৈধ কাগজ নিয়েই ভারতে আসছিলেন।
বাংলাদেশের অভিভাসন দফতরের এক কর্তাদের উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে সংবাদসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া। সৌরভ তপাদার নামে আটক এক সন্ন্যাসী সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ভারতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই তাঁরা আসছিলেন। কিন্তু বেনাপোল সীমান্তে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ভারতে যাওয়ার কোনও সরকারি ছাড়পত্র তাঁদের নেই। যদিও, বৈধ পাসপোর্ট নিয়েই তাঁরা সীমান্ত পার হচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
গত ২৬ নভেম্বর ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। তারপর থেকেই চট্টগ্রাম, রংপুর-সহ একাধিক জায়গায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে বলেই অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই ইসকনের ১৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিজ করা হয়েছে।
এই অবস্থায় বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবেড়িয়ায় কলকাতামুখী একটি বেসরকারি সংস্থা বাসেও হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ, ওই বাসে এসে ইচ্ছাকৃত ভাবে ধাক্কা দিয়েছে একটি লরি। এই ঘটনায় অনেকেই অল্প-বিস্তর আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার না করে, অভিযোগ উল্টে তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতায় ইসকন জানিয়েছে, তারা অসহায় অনুভব করছে।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে দিল্লি। ইতিমধ্যেই বিদেশমন্ত্রক, বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসীদের উপর আক্রমণের ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করেছে। তবে, কূটনৈতিক মহলের দাবি, বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো করতে চায় না দিল্লি। বরং তারা পা ফেলতে চায় জমি মেপেই।
১৫০টি দেশ মিলিয়ে ইসকনের প্রায় ৮৫০টি মন্দির রয়েছে এবং এক হাজারেরও বেশি কেন্দ্র রয়েছে। আর এই প্রতিটি জায়গা থেকেই সমবেত ভাবে বাংলাদেশের ঘটনায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি তোলা হয়েছে। গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে পতন হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের খবর, এরপর থেকে বাংলাদেশের ৫০টি জেলায় সংখ্যালঘুদের উপর ২০০টিরও বেশি হামলার অভিযোগ উঠেছে।