চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারিতে বাংলাদেশের একাংশে প্রভাব পড়েছে। এই রাজ্যেও তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবিতে পথে নেমেছে বিরোধী দলগুলি। এবার এই নিয়ে বিবৃতি দিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ন্যাসীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি করলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডেলে দলনেত্রী শেখ হাসিনার বিবৃতি প্রকাশ করে আওয়ামি লিগ। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, "বর্তমান ক্ষমতা দখলকারীরা সর্বক্ষেত্রেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য় নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ। সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের একজন শীর্ষ নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দিতে হবে। চট্টগ্রামে মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে মসজিদ, মাজার, গির্জা, মঠ, আহমেদিয়া সম্প্রদায়ে ঘরবাড়ি আক্রমণ করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সব সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।"
হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার বাড়ে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পরেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের উপর হামলা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা আনা হয়। জামিনও খারিজ হয়ে যায়। বাংলাদেশের ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে মামলা করা হয় আদালতে। মামলা করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল। বৃহস্পতিবার সেই মামলা খারিজ করে আদালত। জানানো হয়, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কোনও নির্দেশ দেবে না আদালত। এবার তাঁর মুক্তির দাবিতে মুখ খুললেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশ ছাড়ার পর ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে ভারতে আছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা কোথায় আছেন, ভারত সরকার এখনও কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি। শেখ হাসিনার জন্য ভারত প্রোটোকল মেনেই নিরাপত্তা দিচ্ছে। তবে তাঁর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গোপনীয়তার ব্যাপারেই জোর দিয়েছে ভারত সরকার। লুটিয়েন্স বাংলো এলাকায় মন্ত্রী, সাংসদদের বরাদ্দ করা বাড়িই দেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনাকে। যদিও নিরাপত্তার স্বার্থে সেই বাড়ির প্রকৃত ঠিকানা বা রাস্তার বিবরণ দেওয়া হয়নি। গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ থেকে ভারতের গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে নিয়ে আসা হয়। দুদিনের মধ্যেই হাসিনাকে নিরাপদে নয়াদিল্লির লুটিয়েন্সে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
শেষ তিন মাস একাধিকবার বাংলাদেশের পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কিন্তু একবারও মুখ খুলতে দেখা যায়নি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এই প্রথম বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি মুখ খুললেন বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান।