আগামী দিনে বড় ধরণের জঙ্গি হামলা হতে পারে বাংলাদেশে। সে দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির মধ্যে এবার এই দাবি করল ব্রিটেন। ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে থাকা তাদের দেশের নাগরিকদের আগাম সতর্ক করা হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ঢাকার বাইরে সব জায়গায় যাওয়ার দরকার নেই। পাশাপাশি ব্রিটেন থেকে যাঁরা বাংলাদেশ যাবেন, তাঁদেরও সতর্ক করা হয়েছে। এই বিবৃতি প্রকাশের আগেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। অবিলম্বে ইউনিস সরকারকে এই ইস্যুতে পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ৫ অগাস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে পতন হয়েছিল হাসিনা সরকারের। গণতন্ত্র বাঁচাতে ঢাকার মসনদে তৈরি করা হয়েছিল মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা সরকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই দেশের ৫০টি জেলা থেকে ২০০-এর বেশি সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে।
গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির ঘটনার পর এখন সামনে চলে এসেছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ। যা বারে বারে অস্বীকার করেছে বাংলাদেশ সরকার। উপদেষ্টা সরকারের এক নেতা বাংলাদেশের প্রথম সারির দৈনিক প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, হাসিনা সরকার বিরোধী আন্দোলনকে জঙ্গি এবং হিন্দু বিরোধী আন্দোলন হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছে ভারত। মাহফুজ আলমের এই অভিযোগকে আমল দিতে চায় না দিল্লি। বরং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে দিল্লির বার্তা খুব স্পষ্ট। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি দিল্লির দাবি, বাংলাদেশে থাকা সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে হবে ইউনুস সরকারকে।
তবে কূটনৈতিক মহলের মতে, ব্রিটেনের বার্তায় অবশ্যই চাপ বাড়াল বাংলাদেশের উপর। আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে এই প্রথম এত কড়া বার্তা দেওয়া হল ঢাকাকে। ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা বেশ উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতিতে সে দেশে বিদেশিদের উপর জঙ্গি হামলা হতে পারে। সেই আশঙ্কা করেই বাংলাদেশের কয়েকটি স্পর্শকাতর জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগের প্রথম সরাসরি প্রভাব পড়েছে ত্রিপুরার আগরতলায়। ইতিমধ্যেই আগরতলার উপ-হাইকমিশন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এই ইস্যুতে তাদের বিদেশমন্ত্রকে ডেকে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তা জানানো হয়েছে। আপাতত আগরতলা থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য কোনও ভিসা পাওয়া যাবে না।
দিন যত বাড়ছে, সীমান্তে তত বাড়ছে উদ্বেগ। দুই দেশের বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এই টানাপোড়েনের জেরে যে কোনও সময় সীমান্ত সিল করার সিদ্ধান্ত হতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ফিরতে চান তাঁরা।