গত সোমবার বিকেলে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশের 'সনাতনী জাগরণ মঞ্চের' মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে গ্রেফতার করেন ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দারা। গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সহ মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। জাতীয় পতাকা অবমাননা করার অভিযোগ জানিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে ওই মামলা করা হয়। এই মামলা দায়েরের পরেই একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের পুলিশ। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রদোহের অভিযোগেই গ্রেফতার করা হয়েছে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে।
কে এই চিন্ময়কৃষ্ণ দাস? তাঁর আসল নাম চন্দন কুমার ধর। বাংলাদেশে ইসকনের সংগঠকদের মধ্যে অন্যতম পুরোধা ছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। ভক্তরা যাঁকে ডাকেন 'চিন্ময় প্রভু' বলে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশের হিন্দু অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের পরিচিত মুখ। তিনি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোট-এর সক্রিয় সদস্য। বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই সরব ছিলেন। চট্টগ্রামের পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর একাধিক সমাবেশের নেতৃত্ব দেন তিনি। তাঁর দাবি, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপরে 'নিপীড়ন'-এর প্রতিবাদ জানাতেই এই সমাবেশ।
উল্লেখ্য, চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে ইতিমধ্যেই ঢাকাকে কড়া বার্তা দিয়েছে দিল্লি। যেভাবে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বাড়ছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিদেশমন্ত্রক। প্রাথমিক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোন আইনে চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্রে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই ব্যাপারে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে ঢাকাকে।
এই অবস্থায় চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা জানিয়েছে, এই গ্রেফতারিকে ভুল ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। তাদের দাবি, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে ইসকনের সাধু চিন্ময়কৃষ্ণ দাস সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে। ইউনুস সরকারের বিবৃতি, হতাশা ও দুঃখের সঙ্গে সরকার লক্ষ্য করছে যে চিন্ময় কৃষ্ণের গ্রেফতারির ঘটনাকে কিছু মহল ভুলভাবে তুলে ধরছে। এটি প্রতিবেশী দুই দেশের বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার পরিপন্থী।