করোনাভাইরাসের (Coronavirus) সব ক'টি ভ্যারিয়ান্ট, প্রজাতির সংক্রমণই পুরোপুরি রুখে দিতে পারে এমন নতুন একটি ভ্যাকসিন (Vaccine) বানালেন অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানীরা। অ্যালার্জির (Allergy vaccine) টিকার পদ্ধতি ব্যবহার করে। নতুন টিকায় করোনার সমস্ত রকম ভ্যারিয়ান্টের সংক্রমণ ও পুনর্সংক্রমণ রোখা যাবে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। এই নতুন টিকার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘সার্স-কোভ-২ সাবইউনিট’ টিকা বা ‘প্রি-এস-আরবিডি’ টিকা।
এই টিকায় খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টিবডি (Antibody) তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। সেই অ্যান্টিবডিগুলি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও বেশি দক্ষ হয়ে উঠছও বেশি। ফলে, মানবশরীরে ঢুকলেও মানবকোষে ঘাঁটি গাড়তে পারছে না সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে। আর কোষে ঢুকতে পারছে না বলে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধিরও সম্ভাবনা থাকছে না। ফলে, সংক্রমণও হচ্ছে না।
অস্ট্রিয়ার মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনা-র বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এই নতুন কোভিড টিকা বানিয়েছেন। ইঁদুরের উপর এবং গবেষণাগারে কোভিড সংক্রমিত মানবকোষের উপর পরীক্ষা চালিয়ে এই টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘অ্যালার্জি’- (Allergy)তে।
করোনাভাইরাস মানবশরীরে ঢোকার পর কোষের একেবারে বাইরের স্তরের কোষগুলির উপর গিয়ে বসে। তার পর ভাইরাসের শুঁড়ের মতো স্পাইক প্রোটিনের বিশেষ কয়েকটি অংশ দিয়ে মানবকোষের উপর নোঙর ফেলে। এবং এই কাজে ভাইরাসকে সাহায্য করে মানুষেরই দেহে থাকা ‘এসিই২ রিসেপ্টর প্রোটিন’-এর ‘রিসেপ্টর বাইন্ডিং ডোমেন’ (আরবিডি)।
নতুন টিকা বানানো হয়েছে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের ওই আরবিডি অংশগুলিকে লক্ষ্য করেই। ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের আরবিডি-র দু’টি অংশ এবং হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের অ্যান্টিজেন (যার নাম— ‘প্রি-এস অ্যান্টিজেন’) দিয়ে টিকাটি বানানো। যার ফলে, এই টিকায় মানবদেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও তাড়াতাড়ি শত্রুকে চিনতে পারছে।
ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি ফাইজার, মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার মতো বাজারে এখন চালু যে কোভিড টিকা রয়েছে, তা মানবশরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি করতে শেখায়। এই শ্রেণির অ্যান্টিবডির নাম ‘আইজিজি-১’। যে অ্যান্টিবডিগুলি খুব বেশি দিন স্থায়ী হয় না। ফলে, শত্রুকে বেশি দিন ধরে রুখতে পারে না।