এ আর রহমান-সায়রা বানুর বিচ্ছেদ । তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রহমানের টিমের সদস্য তথা বেসিস্ট মোহিনী দে-র ডিভোর্স ঘোষণা । আর এই দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে জোর চর্চা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । রহমানের বিচ্ছেদের পিছনে একটা পরকীয়ার আভাস পাচ্ছে নেটপাড়া । গুঞ্জন চলছে, মোহিনীর কারণেই কি রহমান-সায়রা বানুর বিচ্ছেদ ? কে এই মোহিনী দে, যাঁকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে ।
হাতে গিটার, মঞ্চে মোহিনী । গিটারের তারে সুরের ঝংকার তুলছেন । তাঁর শৈল্পিক জাদু মন্ত্রমুগ্ধ শ্রোতারা । বয়স মাত্র ২৯ । আর এই বয়সেই মোহিনী একুশ শতকের সেরা ১০ বেসিস্টের মধ্যে একজন । মোহিনী কলকাতার মেয়ে । মাত্র ৯ বছর বয়সে সঙ্গীতজগতে যাত্রা শুরু তাঁর । অনেক ছোট থেকেই মঞ্চে পারফর্ম করছেন । গান বাংলা এস উইন্ড অফ চেঞ্জ-এ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন । খুব দ্রুত খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে যান মোহিনী ।
স্টিভ ভাই, জাকির হুসেন, ভিনি কোলাইউটা ও পপ তারকা উইলো স্মিথের মতো কিংবদন্তির সঙ্গে কাজ করেছেন । এমটিভি আনপ্লাগড, কোক স্টুডিও এবং দ্য টুনাইট শো উইথ জিমি ফ্যালনের মতো প্ল্যাটফর্মে পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছেন মোহিনী । ২০২৩ সালে তাঁর প্রথম অ্যালবাম রিলিজ করে । অ্যালবামের নাম ফ্রি স্পিরিট । রহমানের টিমেও কাজ করেন মোহিনী । দেশ-বিদেশ মিলিয়ে রহমানের সঙ্গে প্রায় ৪০টি শো-তে পারফর্ম করেন ।
বোল্ড লুকেই নজর কেড়েছেন মোহিনী । কখনও ঝাঁকড়া চুল, কখনও আবার জটা...বারবার ছক ভেঙেছেন বেসিস্ট । সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ফলোয়ার্সের সংখ্যাও প্রচুর । ইন্সটাগ্রামে ফলোয়ার্সের সংখ্যা ৫ লাখ ১১ হাজার । ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার ১ লাখ ৯০ হাজার ।
নিন্দুকরা বলছেন, মোহিনীর মোহেই সংসার ভেঙেছে এ আর রহমানের । যদিও এই নিয়ে মুখ খোলেননি রহমান বা মোহিনী । তবে, এই বিষয়ে রহমানের আইনজীবী জানিয়েছেন, দুই ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র নেই । সায়রা এবং রহমান নিজেরাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার হঠাৎ রাতে প্রথমে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেন সায়রা বানু । তারপর মধ্যরাতে বিচ্ছেদ নিয়ে বিবৃতি দেন সঙ্গীতশিল্পী এআর রহমান। টুইটারে তিনি লিখছেন, ‘আমরা গ্র্যান্ড থার্টিতে পৌঁছনোর আশা করেছিলাম, কিন্তু সবকিছু, মনে হয়, একটি অদেখা শেষ বহন করে। এমনকি ভগ্ন হৃদয়ের ভারে ঈশ্বরের সিংহাসনও কেঁপে উঠতে পারে। তবুও, এই ছিন্নভিন্নতায়, আমরা অর্থ খুঁজি, তবে টুকরোগুলি আবার তাঁদের জায়গা খুঁজে পাবে না।’ বন্ধু এবং শুভানুধ্যায়ীদের কাছে তাঁদের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করার আহ্ববান জানিয়ে কিছুটা প্রাইভেসি চেয়ে নিয়েছেন রহমান।
১৯৯৫ সালে সায়রা বানুর সঙ্গে বিয়ে হয় রহমানের। মাত্র দু’মাসের আলাপে বিয়ে। সম্বন্ধ করেই বিয়ে হয় তাঁদের । প্রায় ২৯ বছরের সংসার । তিন সন্তানের বাবা-মা । কিন্তু, রহমানের আক্ষেপ ৩০টা বছর পূর্ণ করা হল না । অবশেষে দাম্পত্যে ইতি টানলেন তাঁরা ।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুরকার স্বামী মার্ক হার্টসুচের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেন মোহিনী । সঙ্গীতশিল্পী লেখেন, ভারাক্রান্ত মন নিয়ে তাঁরা আলাদা হতে চলেছেন । পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা । তবে, বিচ্ছেদের পরও তাঁরা বন্ধু থাকবেন । একসঙ্গে কাজ করবেন । বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে মোহিনী জানিয়েছেন, দু'জনেরই মনে হয়েছে, জীবন থেকে তাঁদের চাহিদা ভিন্ন । তাই আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত । একইসঙ্গে মোহিনীর অনুরোধ, ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । তাই দয়া করে যেন তাঁদের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাঁটাছেড়া না করা হয় ।