মাটি ধসের ঘটনায় ছ বছর আগের সেই বিপর্যয়ের স্মৃতি ফিরল ভবগানের আপন দেশে। মঙ্গলবার ভোরে একবার নয়, পর পর তিন বার ধস নেমে কেরল থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ওয়ানাডকে। রাত পর্যন্ত সরকারি হিসাব বলছে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে। উদ্ধারে আর দেরি না করে নামানো হয়েছে সেনাকে। দিল্লি থেকে দক্ষিণের এই রাজ্যের উপর নজর রাখছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পড়শি তামিলনাড়ু। পাঁচ কোটি টাকা আপাতত সহায়তার জন্য পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু কেন এই বিপর্যয় ? কী কারণে এই ধস ? এমনিতে কেরলের পাহাড়ি এলাকা ওয়েনাড। মূল চা বাগান রয়েছে এই অঞ্চলে। জানা গিয়েছেন মধ্যরাত প্রবল বৃষ্টিতে প্রথম ধস নেমেছিল চুরমালা গ্রামের উপরে। আর তাতেই বিপর্যয় শুরু। এরপর চার ঘণ্টার পর আরও দুটি ধসে বিধ্বস্ত এখন রাহুল গান্ধীর প্রাক্তন সংসদীয় এই কেন্দ্র।
বলা হচ্ছে, বর্ষা আসার আগেই ধস নামার ব্যাপারে কেরল সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিল। সতর্ক করেছিলেন দিল্লির আইআইটির বেশ কয়েকজন গবেষক। তাঁরা জানিয়েছিলেন, ওয়ানাডের ৫৮.৫২ শতাংশ এলাকাতেই ধস নামার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। গবেষকদের দাবি ছিল, ধারা বদলেছে বৃষ্টিপাতা। আর তাতেই বেড়েছে ঝুঁকির পরিমাণ।
তাই এই সময়ে ওই এলাকায় পাহাড়ের কোলে কৃষি বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছিল। দাবি করা হয়েছে, ২০১৮ সালের বন্যার পর থেকেই রাজ্যে ধস এবং বন্যার চরিত্র বদল হয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের দেশের যত ধসের ঘটনা ঘটেছে, তার সিংহভাগ হয়েছে কেরলে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যে আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। যাতে বিজয়ন সরকারের কপালের ভাঁজকে পুরু করেছে। কারণ, বৃষ্টি হলেই থমকে যাবে উদ্ধারের কাজ। ইতিমধ্যে আহতদের হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি খোলা হয়েছে ৪৫টি ত্রাণ শিবির।