Subhash Chandra Bose Birth Anniversary: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজকে (Azad Hind Fauj) বাদ দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস লেখা অসম্ভব। আজাদ হিন্দ ফৌজের বীর সেনানীরা যে বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, তার তুলনা মেলা ভার। নেতাজি সুভাষচন্দ্রের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মরণপণ সংগ্রামে।
গৃহবন্দি সুভাষচন্দ্র ইংরেজ সরকারের নজরদারি পেরিয়ে পৌঁছে গেলেন জার্মানিতে। সেখানেই তিনি প্রথম প্রতিষ্ঠা করলেন তাঁর স্বপ্নের সেনাবাহিনী৷ কিন্তু সেই উদ্যোগ খুব ফলপ্রসূ হল না। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যেই সাবমেরিনে করে তিনি পাড়ি দিলেন জাপানে৷
আরও পড়ুন- Netaji on screen: সুভাষময় বঙ্গ জীবন! বাঙালির প্রেমে এবং ফ্রেমে, নানা রঙে নেতাজি
ব্রিটিশ ভারতীয় বাহিনীর যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে ১৯৪২-এ প্রথম আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রতিষ্ঠা করেন ভারতের আর এক বিপ্লবী নেতা রাসবিহারী বসু। আজাদ হিন্দ ফৌজে সাড়ে আট হাজার সেনা ছিলেন। এতে মহিলাদের একটি ইউনিটও ছিল।
জাপানে আসার পর সুভাষচন্দ্র বসু দক্ষিণ এশিয়ার বসবাসকারী ভারতীয়দের সাহায্যে আবার আইএনএ গঠন করে এই বাহিনীর নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন।
১৯৪৩-এ ২১ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সর্বোচ্চ সেনাপতি হিসেবে স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকার গঠন করেন সুভাষ চন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
আজাদ হিন্দ সরকারের ছিল নিজস্ব আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্ক। এই ব্যাঙ্কের ১০ টাকার কয়েন থেকে শুরু করে এক লক্ষ টাকার নোটও ছিল। ছিল নিজস্ব ডাক টিকিট ও তেরঙ্গা পতাকা।
১৯৪৪-এ ভারতের কোহিমা ও ইম্ফলের কাছে ব্রিটিশ বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিল আইএনএ। কোহিমায় স্বাধীন ভারতের পতাকা উড়িয়ে দেন তাঁরা। আজাদ হিন্দ সরকার জাপানের কাছ থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অধিকারও অর্জন করেছিল। এই সরকারের ছিল নিজস্ব মুদ্রা,বিচার ব্যবস্থা ও দণ্ডবিধি।
প্রায় সমগ্র বার্মা শত্রুমুক্ত করে মাতৃভূমির মাটি স্পর্শ করে আজাদ হিন্দ ফৌজ। কিন্তু একদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির বিপর্যয়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আজাদ হিন্দ ফৌজকে বেসামাল করে দেয়। পরাজিত হয় মরণজয়ী মুক্তিযুদ্ধ। সর্বাধিনায়ক সুভাষচন্দ্রের শেষ পরিণতি আজও রহস্যাবৃত।
আরও পড়ুন- Parakram Divas 2022: বিতর্কের মধ্যে দিয়েই নেতাজির জন্মদিনে গত বছরই প্রথম পালিত হয় 'পরাক্রম দিবস'
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে উজ্জ্বলতম অধ্যায়গুলির একটি আজাদ হিন্দ ফৌজের বীরগাথা। তাঁদের বীরত্ব, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ কোটি কোটি ভারতবাসীর মনে আগুন জ্বেলে দিয়েছিল। সর্বাধিনায়ক সুভাষচন্দ্রের জন্মদিবসে আজাদ হিন্দ ফৌজের বীর সেনানীদের সশ্রদ্ধ প্রণাম।