দূরত্ব মাপলে দাঁড়ায় ১৬৬৮ কিলোমিটার !
দূরত্বের এই ফারাক থাকলেও বুধবারের একটি ঘটনায় একবিন্দু এখন কলকাতা ও চেন্নাই। গত ৯ অগাস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের দেহ। ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল। আর এদিন, চেন্নাইয়ের এক সরকারি হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে অভিযোগ বর্ষীয়ান সরকারি চিকিৎসককে অবলীলায় কুপিয়ে চলে গেলেন এক রোগীর ছেলে। ফলে প্রশ্ন সেই একটাই, পশ্চিমবঙ্গ হোক বা তামিলনাড়ু, সরকারি হাসপাতালের মধ্যে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা কোথায় ?
কলকাতার আরজি করের মতোই একটি বড় সরকারি হাসপাতাল চেন্নাইয়ের কলাইঘনার সেন্টেনারি হাসপাতাল। দীর্ঘ সময় ধরে এই হাসপাতালে ক্যানসারের চিকিৎসা করাচ্ছেন এক মহিলা। অভিযোগ, এদিন সকালে চুরি হাতেই হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাঁর ছেলে। আক্রমণ করে বর্ষীয়ান ওই চিকিৎসকের উপরে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা গিয়েছে, সবার সামনে সরকারি ওই চিকিৎসকের মাথা থেকে বুক পর্যন্ত সাতবার হামলা চালানো হয়। রক্তে ভেসে যায় হাসপাতালের মেঝে। ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ওই চিকিৎসককে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে হাসপাতালের মধ্যে থেকে ছুটে পালানো চেষ্টা করে ওই অভিযুক্ত।
ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই তাকে গ্রেফতার করেছে চেন্নাই পুলিশ। ধৃত নিজেকে ওই হাসপাতালের কর্মী বলেই দাবি করেছে। জেরায় পুলিশের কাছে সে স্বীকার করেছে, স্রেফ সন্দেহে বশে এই হামলা। জেরায় সে জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মায়ের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে ক্লান্ত। তার মনে হয়েছিল, ভুল ওষুধ দিয়ে এই চিকিৎসক মার অসুখকে জিইতে রাখতে চাইছেন।
সরকারি হাসপাতালের মধ্যে দিনে-দুপুরে চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় নড়ে যায় তামিলনাড়ু সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্তালিনের নির্দেশে হাসপাতালে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্তালিনও। ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত চিকিৎসক আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। তিনি একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। পেসমেকারও বসানো হয়েছে। তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর চিকিৎসার সব খরচ বহন করবে রাজ্য। এই ঘটনায় সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছেন ডাক্তারি সংগঠনগুলি।
এই ঘটনার পর ফের তারা মনে করিয়ে দিয়েছেন আরজি করের ঘটনাকে। যার জেরে সম্প্রতি উত্তাল হয়েছিল কলকাতা। এই শহরের পাশে দাঁড়িয়েছিল বাকি দেশ।