মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। ক্ষতি ২০০ কোটি টাকা। রেলের এই পরিসংখ্যান শুধুমাত্র বিহারের। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার অগ্নিপথের আগুনে পুড়েছে ৫০টি বগি আর পাঁচটি ইঞ্জিন। শনিবার এই তথ্য় জানিয়েছেন দানাপুরের ডিআরএম প্রভাত কুমার। এর পরেও আছে প্ল্যাটফর্ম এবং রেলের বিভিন্ন সম্পত্তির খতিয়ান। এই পরিসংখ্য়ানের মধ্য়েই শনিবারও অগ্নিপথের আঁচ থেকে বাঁচতে একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। পূর্ব ও পূর্ব-মধ্য রেল মিলিয়ে মোট ১১টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এরমধ্য়ে আছে কলকাতা ও হাওড়া থেকে ছাড়া বিহারগামী ট্রেনগুলি।
কেন্দ্রের অগ্নিপথ ঘোষণার পর থেকেই আগুন জ্বলেছে বিহারে। রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে গত ৪৮ ঘণ্টায় একাধিকবার হিংসার খবর পাওয়া গিয়েছে। বিশেষ করে রেলের উপর হামলা হয়েছে ছাপড়া, বক্সার, বেগুসরাই, লখিসরাই, আরা- মতো জেলাগুলিতে। রাস্তায় বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি এই সব জেলায় স্টেশনের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল উত্তেজিত জনতা। তাদের কাবু করতে কার্যত ব্যর্থ হয় রেল পুলিশ। অভিযোগ, সেই সুযোগেই পর পর ট্রেনের কামরায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার ছিল সূচনা মাত্র। মাত্রা ছাড়ায় শুক্রবার। দেশের ১৩টি রাজ্যে এই বিক্ষোভ যখন শুধুমাত্র সড়কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, তখন বিহারের নিশানায় ছিল শুধুমাত্র রেল। দেশের দুই প্রাক্তন রেলমন্ত্রী এই রাজ্য থেকে। বিশেষকরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও রেলমন্ত্রী ছিলেন। তাই প্রশ্ন উঠছে, কেন বিহার সরকার রেলকে নিরাপত্তা দিতে পারল না ? কার গাফিলতিতে রাজ্যের একাধিক জেলার, একাধিক স্টেশনে প্রতিবাদের নামে তাণ্ডব চালালেন বিক্ষোভকারীরা ? এই পরিস্থিতিতে রেল সূত্রে খবর, শনিবারও তারা কোনও ঝঁকি নিতে চায়নি। তাই, এদিনও ১১টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলা এবং বিহার থেকে যাতায়াতকারী মোট আটটি ট্রেনের চলাচল বাতিল ঘোষণা করল পূর্ব-মধ্য রেল। তালিকায় রয়েছে কলকাতা এবং হাওড়াও। এদিন বাতিল করা হয়েছে শিয়ালদহ-বালিয়া এক্সপ্রেস, হাওড়া-রাঁচি শতাব্দী এক্সপ্রেস, কলকাতা-জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস। বাতিলের তালিকায় আছে, মালদহ টাউন-নিউদিল্লি এক্সপ্রেস ট্রেন, হাওড়া-দেরাদুন কুম্ভ এক্সপ্রেস, হাওড়া-পটনা জনশতাব্দী এক্সপ্রেস। এ ছাড়া রয়েছে, সাহিবগঞ্জ-দানাপুর ইন্টারসিটি, জামালপুর-ভাগলপুর প্যাসেঞ্জার ট্রেন, আসানসোল-গয়া মেমু এক্সপ্রেস, আসানসোল-বারাণসী মেমু এক্সপ্রেস, ভাগলপুর-আনন্দ বিহার গরিবরথ।