হাসপাতালের বিশাল লবি। তার মধ্যে দিয়ে হেটে যাচ্ছেন এক যুবক। গায়ে হাল্কা সাদা জামা আর নস্যি রঙের প্যান্ট। হঠাৎ করে লবি মাঝেই থেমে গেলেন। পকেট থেকে কী যেন একটা বারও করলেন। সেটা ফেলে দিয়ে আবার হাঁটতে শুরু করলেন।
১৩ নভেম্বর চেন্নাইয়ের কালাইনার সেন্টেনারি হাসপাতালের এই ভিডিও এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যার সত্যতা স্বীকার করেনি এডিটরজি বাংলা। হাসপাতালের দরজা দিয়ে বেরনোর আগেই ওই যুবককে ঘিরে ধরেন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা। শুরু হয় গণপিটুনি। এই যুবকই তার মায়ের চিকিৎসক বালাজি জগন্নাথের উপর হামলার মূল অভিযুক্ত।
এই ভিডিওতে যেমন অভিযুক্তের ছবি ধরা পড়েছে তেমনই চেন্নাইয়ের এই সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তার পর্দাও ফাঁস করে দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে শহরের অন্যতম সেরা সরকারি হাসপাতালের মধ্যে ছুরি নিয়ে কী ভাবে ঢুকলেন এই যুবক ? কী ভাবে একজন সিনিয়র চিকিৎসককে অবলীলায় কুপিয়ে হাসপাতালের মধ্যে ফেলে দিলেন নিজের অস্ত্র ?
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও কোনও উত্তর নেই এমকে স্তালিন সরকারের। কারণ, এই ঘটনার উত্তর দেওয়ার আগেই একই শহরে ফের আক্রান্ত হয়েছেন আরও এক সরকারি চিকিৎসক। এই ঘটনা স্ট্যানলি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। সেখানে এক মনোরোগীর হাতে আক্রান্ত হয়েছেন হরিহরণ নামের মনোরোগ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক।
মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শহরের দুই সরকারি হাসপাতালে আক্রান্ত দুই সরকারি চিকিৎসক। যার প্রতিবাদে চেন্নাইয়ের রাস্তায় সরকারি চিকিৎসকরা। ফলে কার্যত শিকেয় উঠেছে পরিষেবা। কলকাতা আরজি করের ঘটনায় দূর থেকে আন্দোলনে ছিল রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে রাজ্যে মেঘনাদের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল বামেদের।
কিন্তু তামিলনাড়ুর প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। সরাসরি আন্দোলনরত ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের বিরোধী দল অল ইন্ডিয়া আন্না ডিএমকে। বিরোধী পক্ষ হলেও এই আন্দোলনে এআইএডিএমকে-র হাত শক্ত করেছে বামেরা। একযোগে চেন্নাইয়ের মসনদ থেকে এমকে স্তালিনের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।
এই অবস্থায় কেমন আছেন কলাইনার সেন্টিনারি হাসপাতালের আহত চিকিৎসক বালাজি জগন্নাথ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আগের থেকে অনেকটা ভাল আছেন বর্ষীয়ান চিকিৎসক। বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর জন্য হাসপাতালের মধ্যে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।