দুর্গা পুজো আর কুমারী পুজো একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিক ভাবে জড়িত। মন্দির, বারোয়ারি বা বাড়ির পুজোয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অষ্টমীর দিন কুমারী পুজো করা হয়। তবে, কোথাও কোথাও নবমী এবং দশমীর দিনেও কুমারী পুজো করা হয়ে থাকে। ১ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী অরজঃস্বলা কুমারী মেয়েদের মাতৃজ্ঞানে এই পুজো করা হয়।
শতকের পর শতক ধরে চলে আছে এই কুমারী পুজোর রীতি। কিন্তু কেন করা হয় এই কুমারী পুজো?
শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, একসময় বানাসুর স্বর্গ, মর্ত, পাতাল দখল করে নিয়েছিল। সেই সময়ে বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর স্মরনাপন্ন হন। দেবগণকে রক্ষা করতে দেবী কুমারীরূপে পুনর্জন্ম নেন। দেবীর ওই কুমারী রূপেই বানাসুরকে বধ করেছিলেন। সেই মর্ত্যে এই পুজোর প্রচলন।
আজও সেই রীতি চলে আসছে। দুর্গা পুজোর অষ্টমীতে নারীকে মাতৃ রূপে পুজো করা হয়। মূলত মনের পশুত্বকে সংযত রেখে নারীকে সম্মান জানানো কুমারী পুজোর মূল লক্ষ্য। অষ্টমীর দিন শিশুকন্যা বা কুমারী কন্যাকে স্নান করিয়ে মাতৃ মূর্তির মতো করে সাজানো হয়। তারপর দেবী মূর্তির সামনে বসিয়ে আরাধনা করা হয়। পুজোয় দেবীকে যে ভোগ দেওয়া হয় সেই ভোগই অর্পণ করা হয় তার উদ্দেশেও। এরপর তার পায়ে ফুল দিয়ে প্রণাম করা হয়।
এই পুজোতে জাতি, ধর্ম, বর্ণের কোনও ভেদাভেদ নেই। যে কোনও কুমারীই দেবীজ্ঞানে পূজনীয়। লক্ষ্মী, সরস্বতী এবং কালী এই ত্রিদেবীকে তুষ্ট করার লক্ষ্যে এই পুজো করা হয়। এছাড়াও বলা হয় বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যে তিনটি শক্তি বিরাজ করছে ওই তিনটি শক্তিই বীজাকারে কুমারীতে নিহিত। তাই কুমারীকে দেবী রূপে পুজো করা হয়। এই পুজো কল্যাণ,সুখ সমৃদ্ধি বয়ে আনে।