দানার প্রভাবে কলকাতায় জারি করা হল কমলা সতর্কতা। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত ছ ঘণ্টায় গতিবেগ আরও বাড়িয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। গতিবেগ বেড়েছে ঘণ্টায় আরও ১৫ কিলোমিটার। এই পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আগাম কোমড় বাধল কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। রেমাল-সহ আগের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার অনেক বেশি সতর্ক বিমানবন্দরের কর্তারা।
মৌসম ভবনের দাবি, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবারের ভোরের মধ্যে সাগর ও পুরীর মধ্যে ভিতরকণিকা ও ধামরা বন্দরে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় দানা। বুধবারই বৈঠক করেছেন কলকাতা বিমান বন্দরের কর্তারা। যেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রয়োজনে প্রতিটি বিমানকে এবার বেঁধে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। মূলত, রানওয়ে এবং পার্কিং-বে-তে থাকা বিমান গুলির ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়াও সিদ্ধান্ত হয়েছে, ট্রলি থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু বেঁধে রেখে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখার পরিকল্পনাও নেওয়া হতে পারে। বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢোকা এবং বেরোনোর গেটে বালির বস্তা দিয়ে ঝড় মোকাবিলা করারও চিন্তাভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
যদিও বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এটা সবটাই পরিকল্পনা। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই এখনই কোনও উড়ান বাতিলের আগাম খবর নেই। এমনকী, কোন সময় থেকে কোন সময় পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে, তা-ও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
যদিও দানা ঝাপটানোর আগে রেল কিন্তু জানিয়ে দিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শিয়ালদহের প্রতিটি শাখায় লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকবে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় দানার কথা মাথায় রেখে ২৪ অক্টোবর তারিখ রাত আটটার পর কোনও ট্রেন ছেড়ে যাবে না।
এর পাশাপাশি হাসনাবাদ ও নামখানা শাখার কোনও ট্রেন সন্ধ্যা সাতটার পর ছেড়ে আর শিয়ালদহে আসবে না। ঝড়ের সময় মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পূর্ব রেলের এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন কৌশিক মিত্র। তিনি জানিয়েছেন, ২৫ তারিখ অর্থাৎ শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত শিয়ালদহে লোকাল ট্রেনের পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। পুরসভা থেকে লালবাজারে শুরু হয়ে গিয়েছে তৎপরতা। নবান্নেও খোলা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। বুধবার সকাল থেকেই উপকূলের অঞ্চলগুলিতে দেখা গিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে মাইকিং করতে।
ইতিমধ্যেই ত্রাণ তৈরি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত, চার জেলা, দুই মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনার মন্ত্রীদের ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করতে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি দক্ষিণবঙ্গের ১০ জেলা ডুবে ছিল বন্যার জলে। সেই সময় রাজ্যের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, ডিভিসির জলেই বানভাসি হয়েছে একাধিক অঞ্চল। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে ডিভিসিকে নতুন করে জল না ছাড়ার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।