কানাঘুষো অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। তা-হলে কী সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে পারে। একবার নয়, গত কয়েকদিনে একদিক বার বেফাঁস মন্তব্য করেছেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ দমদমের বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের (Saugata Roy) বিরুদ্ধে। আর তার জেরেই নাকি তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির (TMC Disciplinary Committee) সামনে তাঁকে তলব করা হতে পারে। তৃণমূল (TMC) সূত্রে এমনটাই শোনা যাচ্ছে। কী কী বলেছেন সৌগত ? রাজ্যে যখন নারী নির্যাতন অভিযোগে তোলপাড়, তখন গত সপ্তাহে নিজের সংসদীয় কেন্দ্রের অন্তর্গত দক্ষিণেশ্বরে দাঁড়িয়েই সৌগত মন্তব্য করেছিলেন, "যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা, সেই রাজ্যে একটি ধর্ষণের ঘটনাও লজ্জার।" বর্ষীয়ান সাংসদের এই প্রতিক্রিয়া বিরোধীদের কোর্ট থেকে ছিনিয়ে নিতে তৃণমূলের প্রায় প্রত্য়েক নেতাকেই মাঠে নামতে হয়েছিল। বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় (Satabdi Roy) আবার সাফ জানিয়েছিলেন, তিনি দমদমের সাংসদের সঙ্গে একমত নন। কারণ, কোনও মুখ্য়মন্ত্রী চান না, তাঁর রাজ্যে ধর্ষণের মতো কোনও ঘটনা ঘটুক। তা তিনি পুরুষই হন, বা মহিলা। রাজ্যে নারী নির্যাতনের অভিযোগের মধ্যে দমদমের সাংসদের এহেন মন্তব্যের জন্য তাঁকেই কার্যত ভর্ৎসনা করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।
এই পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার তাঁর বাড়ির সামনে ঘটে যাওয়া তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়েও মুখ খোলেন সৌগত রায়। এরপরেই তিনি জানান, "রেল কলোনির আন্দোলন বা নকশাল আমলেও এই ধরনের ঘটনা হয়নি।" তৃণমূলের একাংশে দাবি, বাইরে মুখ বন্ধ রাখার জন্য গত সপ্তাহে বর্ষীয়ান সাংসদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি বলে ওই সূত্রের খবর। তাই এবার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে ডাকা হতে পারে তৃণমূল সাংসদকে। সূত্রের খবর, দিন কয়েকের মধ্যেই তাঁর কাছে এই ব্যাপারে বার্তা দিতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গিয়েছে, এই ব্যাপারে আলোচনা করতে একবার বৈঠক করেছেন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্যরা। যেখানে নাকি ছিলেন, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সেখানে দলের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ সৌগত রায়ের এহেন মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি।
আরও পড়ুন: কলকাতার বাঁশদ্রোণীতে প্রকাশ্যে গুলি, সিন্ডিকেট নিয়ে বচসার জেরে গুলিবিদ্ধ ২
সোমবার দলের পক্ষ থেকে এক শীর্ষনেতা সৌগত রায়ের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু সোমবারই লেক গার্ডেন্সে একটি বাড়ি ভাঙাকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে বচসা শুরু হয়। সকালে তা মারপিটের আকার নেয়। লাঠি, রড নিয়ে মারপিট চলে বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকজনের মাথাতেও আঘাত লাগে বলে খবর। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। অভিযোগ, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সিন্ডিকেটের বখরা নিয়েই মারপিট হয়। এই প্রসঙ্গ নিয়েও মন্তব্য করেন সৌগত রায়।