হেয়ার ড্রেসার গিল্ড ও ফেডারেশন একযোগে কাজ কেড়ে নিয়েছে। এমনই অভিযোগ জানিয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন টলিউডের এক কেশসজ্জা শিল্পী। শনিবার রাতে ওই শিল্পীকে শেষ মুহূর্তে বাঁচায় তাঁর মেয়ে। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়েই হাসপাতালে যান পরিচালক সুদেষ্ণা রায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী, চৈতি ঘোষাল, মানালি দে, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়রা।
জানা গিয়েছে, ওই কেশসজ্জা শিল্পী একবার কোনও বিষয় প্রতিবাদ করে তিনমাস সাসপেন্ড হয়েছিলেন। পরে কাজে ফেরেন। কিন্তু একের পর এক কাজ হারিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। সংসার চালাতে অনেক দেনাও করতে হয়। নির্দিষ্ট সময় পর কাজে ফিরেও তাঁকে শর্ত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। একটি গিল্ড ও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পাঠিয়ে তাঁকে বলা হয়, "আপনাকে সংগঠনের কাজে নিযুক্ত করার অনুমতি দেওয়া হল। কিন্তু আপনি নিজে কোনও কাজ ধরে কাজ করতে পারবেন না। ২০২৪-২০২৫ কমিটি আপনার প্রতিদিনের কাজের বিবরণ জানিয়ে দেবে। আপনি কমিটির দেওয়া কাজই করবেন। ভবিষ্যতে কোনও সদস্যের বিষয় ভ্রান্ত আলোচনায় যুক্ত থাকলে, আপনার প্রতি আমাজের কোনও রকম সহানুভূতি থাকবে না। আপনার বিষয় সংগঠন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য থাকবে।"
জানা গিয়েছে, পরিচালক মৈনাক ভৌমিকের আগামী ছবির লুক সেট রয়েছে। সেই কাজ ওই শিল্পী নিজেই জোগাড় করেন। কিন্তু শনিবার প্রোডাকশন ম্যানেজার ফোন করে জানান, গিল্ড থেকে বলা হয়েছে, তাঁকে যেন কাজ না দেওয়া হয়। তিনি ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বিষয়টি সুরাহা করতে পারেননি। এরপরই শনিবার গায়ে কেরোসিন ঢালেন ওই শিল্পী। তাঁর বক্তব্য, বাড়িতে স্বামী অসুস্থ। মেয়ের পড়াশোনার খরচ আছে। মাত্র এক শিফটে কাজ করে দেনা শোধ, সংসার চালানো কোনও মতেই সম্ভব নয় তাঁর।
অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই এই নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গিল্ডের প্রাক্তন সম্পাদক হেমা মুন্সী। তিনি জানান, একাধিকবার বিষয়টি বলেছেন তিনি। কিন্তু এর পরেও এমন ঘটনা চলতে থাকবে, ভাবতে পারেননি তিনি। তাঁর দাবি, এভাবে মানসিক নির্যাতন চলতে থাকলে সংগঠনের বিরুদ্ধে বাকি সদস্যদের পথে নামতে হবে।
অভিযোগকারী শিল্পীকে সমর্থন জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মীরা। গিল্ড বিরোধী বক্তব্য রাখায় তাঁদেরও সাসপেন্ড করা হয় বলে অভিযোগ। নির্দিষ্ট সময়ের পর জোর করে মুচলেকা লেখানো হয় বলেও অভিযোগ।