সাতসকালে ভূমিকম্প। তারপর এক ট্রলি ব্যাগকে কেন্দ্র করে কেঁপে গেল মঙ্গলবারের কলকাতার। উত্তর কলকাতার আরিহীটোলা ঘাটে ওই ট্রলি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হল মুণ্ডহীন এক মহিলার দেহ। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে আরও দুই মহিলাকে।
প্রাথমিক ভাবে, জানা গিয়েছে বারাসতরে কাজিপাড়া থেকে ট্রেনে করে তাঁরা প্রথম পার্ক সার্কাস স্টেশনে এসে নেমেছিলেন। সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে এসেছিলেন উত্তর কলকাতার প্রাচীন এই গঙ্গার ঘাটে। তাঁদের হাতে এক নীল রঙের ট্রলি দেখে প্রথমে সন্দেহ হয় গঙ্গার ঘাটে থাকা কয়েক জনের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, একটু চেপে ধরতে ধৃত দুই মহিলা জানান, বাড়ির পোষ্যের দেহ গঙ্গায় ভাসাতেই তাঁরা এসেছেন। কিন্তু ট্রলির মধ্যে থেকে ছুঁয়ে পড়া রক্তে সন্দেহ আরও বাড়ে। চাপ দেওয়া হয় ব্যাগ খোলার জন্য। ইতিমধ্যে খবর যায় পুলিশে। পুলিশ আসার আগেই, স্থানীয়দের চাপে ট্রলি খুলতে বাধ্য হন ওই দুই মহিলা। আর চেন খুলতেই ভিতরের ছবি দেখে আঁতকে ওঠেন সবাই।
আরিহীটোলার এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ফাল্গুনী ঘোষ এবং আরতি ঘোষকে। ফাল্গুনী সম্পর্কে আরতির মেয়ে। প্রাথমিক জেরায় পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন, পিসিশাশুড়ির দেহ ভাসাতেই তাঁরা আহিরীটোলায় এসেছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে ট্রেনের টিকিট উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন, এই ট্রলি নিয়ে তাঁরা ট্রেনে উঠেছিলেন। জানা গিয়েছে নিহতে নাম সুমিতা ঘোষ।
কিন্তু অঙ্ক মিলছে না কাজিপাড়ায়। যে বাড়িতে এই দুই মহিলা ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়িতেও যায় পুলিশ। কিন্তু প্রতিবেশিদের অভিযোগ, গত আড়াই বছরে এই দুই মহিলার বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ রয়েছে। বাড়ির মালিককে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। প্রতিবেশিদের অভিযোগ, পাড়ায় থাকলেও, কারোর সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। বরং তাঁদের বাড়িতে প্রতিনিয়ত বাইরের লোকেরা আসতেন। বিশেষ করে, রাতে বাইরের ছেলেরা তাঁদের বাড়িতে আসতেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এই নিয়ে একসময় বিস্তর ঝামেলাও হয়েছে।
কেন খুন করা হল সুমিতা ঘোষকে ? তিনি কি সত্যিই সম্পর্কে ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি ছিলেন ? নাকি অন্য কোন সম্পর্ক রয়েছে, এই তিন মহিলার মধ্যে। খুন হলেও, কবে খুন করা হল, কোন অস্ত্র এই ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছিল। ট্রলি থেকে যে চার টুকরো দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানে সুমিতার মাথা পাওয়া যায়নি। পুলিশের কাছে এখন চ্যালেঞ্জ, মৃত সুমিতার মাথা কোথায় ? তা কী ট্রেনে করে আনার আগেই ফেলে দেওয়া হয়েছে, নাকি লুকিয়ে রাখা হয়েছে কাজিপাড়াতেই। তদন্ত চলছে।