অভাবের তাড়নায় অনেক ছেলে-মেয়েরই লেখা পড়ার ইচ্ছে থাকলেও, সম্ভব হয়ে ওঠে না। উল্টে ছোট বয়স থেকেই তাঁদের ঠাঁই হয় চায়ের দোকান, হোটেল কিংবা অসংগঠিত ক্ষেত্রে। শিশু শ্রমিক হিসেবেই কেটে যায় তাঁদের ছেলেবেলা। শিক্ষার্থীদের অভাবে একাধিক স্কুলের অবস্থাও তথৈবচ। কোনওরকমে চলে স্কুল। আর এর জেরেই ছোট বেলা থেকেই ধাক্কা খায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা। এবার খুদেদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে নয়া উদ্যোগ আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার তালকুড়ি গ্রামে। বর্তমান সময়ে এক টাকার কোনও দাম না থাকলেও, তালকুড়ি গ্রামে এই এক টাকার বিনিময়েই মিলবে শিক্ষা।
আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের সহায়তায়, দোসর এনজিওর উদ্যোগে এই এক টাকার পাঠশালা খোলা হল তালকুড়ি গ্রামে। কেন এই পাঠশালা খোলা হল? কারণ কী? এই প্রসঙ্গে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা স্কুলে পড়াশোনা করে। কিন্তু স্কুল থেকে ফিরে এসে তাঁদের লেখা পড়া দেখিয়ে দেওয়ার মতো আর কেউ থাকেন না। আলাদা করে বাচ্চাদের জন্য টিউশন রাখার সামর্থ্যও থাকে না অনেক বাবা-মায়েরই। সেই চিন্তা থেকেই এই পাঠশালা খোলার পরিকল্পনা হয়েছে।
বিধায়ক অগ্নিমিত্রা জানান, শুধু শিশুদেরই নয়, তাঁদের অভিভাবকদেরও এই পাঠশালায় পড়ানো হবে। এখন তালকুড়ি এবং কালাঝরিয়া গ্রামে এই পাঠশালা চালু করা হল। বর্তমানে এই দুটি পাঠশালায় ৫০ জন পড়ুয়া রয়েছে। একদম শুরুতেই পাঠশালায় খুদেদের উৎসাহ দেখা গিয়েছে চোখে পড়ার মতো। এলাকাবাসীও বেজায় খুশি এমন এক উদ্যোগে।
বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল জানান, এই সবে শুরু ধীরে ধীরে এমন উদ্যোগ আরও নেওয়া হবে। ওই পাঠশালায় যিনি পড়াচ্ছেন তিনিও চাকরিহীন ছিলেন। এই উদ্যোগে সকলেরই ভাল হবে বলে জানান তিনি। আগামীদিনে এই এক টাকার পাঠশালা কতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠে সেটাই এখন দেখার।
গত কয়েক বছরে রাজ্যে প্রাইভেট স্কুলের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে গোটা রাজ্যজুড়েই। সরকারি স্কুলের লেখাপড়ার মান দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে এমন অভিযোগও উঠেছে। হালফিলে তাই অভিভাবকদের প্রবণতা বেড়েছে বাচ্চাদের প্রাইভেট কিংবা কনভেন্ট স্কুলে পড়ানোর। শহরের একাধিক প্রাথমিক স্কুল এর জেরে বন্ধও হতে বসেছে। এমতাবস্থায় আসানসোলের তালকুড়ি গ্রামের এই উদ্যোগ আশার আলো দেখাচ্ছে গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের।