তিনি কান দিয়ে দেখেন ! স্তাবকদের বিশ্বাস করেন এবং তাতে মন্তব্য করেন। নজির ভেঙে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবেই আক্রমণ করার এবার অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারীক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই করা এক বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ না থাকলেও তাদের চলবে। কারণ, তারা প্রধানমন্ত্রীর দেখানো পথে চলেন। বিশ্বভারতী নিয়ে এ যাবৎ মুখ্যমন্ত্রীর যাবতীয় মন্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলেও ওই বিবৃতিতে অভিহিত করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, একজন শিক্ষক ও গুটি কয়েক পড়ুয়ার কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বভারতীকে আক্রমণ করলেন। এটা অস্বভাবিক নয়, কারণ তিনি কান দিয়ে দেখেন। বিশ্বভারতীর এই আক্রমণকে পাল্টা ফিরিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের তাপস রায়। তাঁর মতে, এটা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিবৃতি নয়। মনে হচ্ছে রাজনৈতিক দলের বিবৃতি।
এবারের বীরভূম সফরে বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি সরেজমিনে ঘুরে দেখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সোমবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করেও নাম না করে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তোপ দেগেছিলেন মমতা। গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন তিনি। আর বুধবার ডাকবাংলো মাঠের সভাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মেরুকরণ এবং গৈরিকীকরণ করার চেষ্টা রোখার কথা ফের একবার জানিয়েদেন। প্রকাশ্যেই জানান, চ্যান্সেলর হিসাবে প্রধানমন্ত্রীরও জানা উচিত তাঁর বিশ্বভারতীতে কী চলছে। তাই মমতা জানানা, বিশ্বভারতী সম্পর্কে বিস্তারিত চিঠি লিখবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
তারপরেই বুধবার সন্ধ্যায় পাল্টা বিবৃতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে ছত্রে ছত্রে বেনজির ভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রামণ করা হয়েছে। প্রতীচির জমির কাগজ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অভিযোগ করেছিলেন, ওই কাগজ অপ্রাসঙ্গিক। আর বুধবার ওই বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা থেকে গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী ওই বিবৃতিতে এও লেখা হয়েছে, আজ তাঁর মনোনীত মন্ত্রী ও উপাচার্য গারদের ভিতরে। কী করে হল? কারণ তিনি স্তাবকদের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন তিনি বিধ্বস্ত। শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গে টেনে ওই বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বভারতী একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ না থাকলে তাদের সুবিধা কারণ তারা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলতে অভ্যস্ত।