গরুপাচার তদন্তে বুধবার বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে(Anubrata Mondal) জেরা করতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই(CBI)। ওইদিন বেলা ১১টা নাগাদ কলকাতায় সিবিআইয়ের অন্যতম দফতর নিজাম প্যালেসে অনুব্রতকে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু সিবিআই নয়, কেন্দ্রের আরেক এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কাছে কয়লা পাচারকাণ্ডের বেশকিছু নথিও পাঠালেন তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) সর্বভারতীয় সহ সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দিল্লিতে, ইডি সূত্রে খবর, কয়লাকাণ্ডের তদন্তে তৃণমূল নেতা ও ডায়মণ্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) কাছ থেকে তাঁরা একহাজার পাতার ইমেল পেয়েছেন। ইডি আধিকারিকদের মতে, কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে এই নথি আরও বেশি গতি আনতে পারে।
রাজ্যে গরু পাচারকাণ্ডের(Cattle Smuggling) তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের তালিকায় বীরভূমের নেতা অনুব্রত মণ্ডলের নাম উঠে আসে। এখনও পর্যন্ত মোট চারবার এই ইস্যুতে অনুব্রতকে তলব করেছিল সিবিআই। গরু পাচার (Cattle Smuggling) মামলায় ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তলব করেছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তবে সেদিন হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছিলেন ‘কেষ্টদা।’ পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি আরেকটি নোটিস পাঠিয়ে তলব করা হয়েছিল তাঁকে। ওইদিন তিনি রুটিন চেক আপের জন্য হাসপাতালে ভরতি হন। ফলে নিজাম প্যালেসে গিয়ে তদন্তকারীদের মুখোমুখি হতে পারেননি। এরপর গত ৪ মার্চ ফের অনুব্রতকে নোটিস পাঠানো হয় সিবিআইয়ের তরফে। ১৫ মার্চ তাঁকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরই মাঝে সিঙ্গল বেঞ্চে রক্ষাকবচের আবেদন করেন অনুব্রত। গত ১১ মার্চ উচ্চ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় রক্ষাকবচ উঠে যায় তাঁর।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআই জেরা থেকে বাঁচতে আইনী রক্ষাকবচের আবেদন করেন অনুব্রত। তাঁর আশঙ্কা ছিল গরু পাচারকাণ্ডের (Cattle Smuggling) তদন্তে কলকাতায় ডেকে জেরার নামে সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে। যদিও কলকাতা হাইকোর্টে(Kolkata High Court) তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। প্রথমে সিঙ্গল বেঞ্চ, পরে ডিভিশন বেঞ্চও সিবিআই জেরা থেকে অনুব্রতকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। আদালতের এই নির্দেশ পাওয়ার পরেই গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ফের তৎপর হন সিবিআই কর্তারা। গত সপ্তাহেই চতুর্থবারের জন্য অনুব্রতকে সমন পাঠানো হয়।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরেই বোলপুর থেকে কলকাতায় আসার জন্য রওনা দিয়েছেন বীরভূমের এই দাপুটে নেতা। বুধবার সিবিআই দফতরে তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা। কিন্তু অনুব্রত কি হাজিরা দেবেন? কারণ, তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের একাংশের দাবি, চিকিৎসা করাতে কলকাতায় আসছেন অনুব্রত(Anubrata Mondal)। এর সঙ্গে হাজিরার কোনও সম্পর্ক নেই। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সম্পর্ক আছে কি নেই, তা হয়তো স্পষ্ট হতে পারে বুধবারের বারবেলায়। তাই সবার নজর এখন সেই অনুব্রত এবং নিজাম প্যালেসের দিকে।