বারুইপুরে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী খুনে গ্রেফতার করা হল তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে । পুলিশি জেরায় অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে তারা । প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছিল শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয় উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে । অভিযোগ, পরে তাঁর দেহ ৫ টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয় ।
বৃহস্পতিবার রাতে বারুইপুর থানার মল্লিকপুরের ডিহি মদন মাল্যের একটি পুকুর থেকে পাওয়া যায় প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দেহ । শুধুমাত্র দেহের উপরের অংশই পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় । পরে পায়ের অংশ উদ্ধার করে পুলিশ । বাকি দেহাংশের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উজ্জ্বল চক্রবর্তীর নামে নিখোঁজ ডায়েরি করে তাঁর পরিবার । এরপর তাঁর পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে বারুইপুর থানার পুলিশ । বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি থাকায় স্ত্রী শ্যামলী চক্রবর্তী ও ছেলে জয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ । শুরু হয় জেরা । পুলিশি জেরায় তারা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে ।
কী কারণে খুন ? পুলিস সূত্রে খবর, উজ্জ্বলের স্ত্রী ও ছেলেকে জেরা করে জানা গিয়েছে, প্রায়ই মদ খেয়ে স্ত্রী ও ছেলের উপর অত্যাচার করতেন উজ্জ্বল । বহুদিন ধরেই ছেলের মধ্যে ক্ষোভ জমছিল । ১৪ নভেম্বর রাতেও অতিরিক্ত মদ্যপান করেছিল উজ্জ্বল চক্রবর্তী । এই নিয়ে বাবা ও ছেলের মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হয়, অশান্তি বাঁধে । বাবাকে পাল্টা মারধর করে ছেলে । উজ্জ্বলবাবু জ্ঞান হারিয়ে ফেললে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয় তাকে । এরপর মাথা-সহ মুখ প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে ফেলা হয় । দেহগুলিকে কাটা হয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে । দেহের ৫ টুকরো করা হয় । তারপর দেহাংশগুলিকে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয় । ছেলেকে এই কাজে সাহায্য করেছে তার মা-ও ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বাবার অত্যাচ্যারে অতিষ্ট হয়ে উঠছিলেন ছেলে । রাগ জমছিল ভিতরে ভিতরে । তারই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে । জেরায় সব স্বীকার করে নিয়েছে অভিযুক্তরা । এখনও পর্যন্ত, দেহের উপরের অংশ ও কাটা পায়ের খোঁজ মিলেছে । বাকি দেহাংশের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ ।