পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরীকে বেনজির ব্যক্তিগত আক্রমণ তৃণমূলের বিধায়ক তথা লাভলি মৈত্রর। মঙ্গলবার রাতে একটি টুইট করেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক। বহরমপুরের সাংসদকে তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ের মৃত্যু রহস্য সামনে আনতে বলে টুইট করলেন লাভলি।
তিনি লেখেন, ‘আপনি আগে আপনার স্ত্রী ও মেয়ের মৃত্যুরহস্য সামনে নিয়ে আসুন। সিবিআই তদন্ত চাই.... আপনার মেয়ের মৃত্যুরহস্য উন্মোচন হোক। এক নিদারুণ নির্যাতনে.... কষ্টে, তিলে তিলে আপনার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন তার সত্যটা সামনে আসুক।’
মঙ্গলবার হাঁসখালিতে নিহতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন অধীর। সেখানে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি বলেন, ‘‘আমি জানতে পারলাম, নির্যাতিতার বাবা-মাকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনা নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তাকে সত্যি প্রমাণিত করা জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।’’ পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়ে অধীর বলেন, ‘‘আমি নির্যাতিত পরিবারের পাশে থাকব। তাঁরা যত দূর পর্যন্ত লড়াই করতে চান, আমরা তাঁদের সঙ্গে থাকব।’’ সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে নির্যাতিতার পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে দেন তিনি। রাজনীতির কারবারিদের ধারণা, হাঁসখালি গিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করার জন্যই সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতাকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রয়াত হন অধীরের প্রথম স্ত্রী অর্পিতা চৌধুরী। যদিও দীর্ঘ দিন আলাদাই থাকতেন অধীর-অর্পিতা। তার আগে ২০০৬ সালে অধীর-অর্পিতার একমাত্র কন্যা শ্রেয়সী কলকাতা এক বহুতল থেকে ঝাঁপ করে আত্মহত্যা করেছিলেন। তাঁদের মৃত্যুর এত দিন পর ওই ঘটনাগুলির সিবিআই তদন্তের দাবি তুলে দিলেন রাজনীতিতে মাত্র কয়েক মাস আগে আসা এই তৃণমূল বিধায়ক। এই টুইটের প্রতিক্রিয়া জানতে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তাতে কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, “বিধায়ক হয়েছেন কিন্তু এটা জানেন না, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা প্রশাসন সব আপনাদের হাতে, আপনার দিদিমণিকে বলুন তদন্ত করতে, কমিটি করতে, খোঁজ নিন, আদালতে যান। এখন আপনাদের দিদিমনির দানবী রূপ যত সামনে আসবে, আর ততই আপনারা দাঁত নখ বের করবেন, এ আর নতুন কী! দিদিমণিকে বলুন দীপক ঘোষের বইটা নিয়েও তদন্ত করতে, আদালতে যেতে, যদি সৎসাহস থাকে।”
এরই পাল্টা কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘বিধায়ক হয়েছেন আর জানেন না, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা প্রশাসন সব আপনাদের হাতে। আপনার দিদিমণিকে বলুন তদন্ত করতে, কমিটি করতে, খোঁজ নিন, আদালতে যান। এখন আপনাদের দিদিমনির দানবী রূপ যত সামনে আসবে, আর ততই আপনারা দাঁত নখ বের করবেন, এ আর নতুন কী!’