সোমবার সন্ধ্যায় বহরমপুরের গোরাবাজারে প্রেমিকের হাতে খুন হন তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী। জনসমক্ষে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় সুতপাকে। কিন্তু এই ঘটনা যে আকস্মিক নয়, তা টের পাওয়া যায় সুশান্তের ফেসবুক পোস্ট থেকে। একের পর এক ফেসবুক পোস্টে শুধুই প্রতিহিংসার বার্তা। সে পোস্ট ভিডিয়ো হোক বা লেখা, সর্বত্রই ক্ষোভের আঁচ। কোনও কোনও পোস্টে স্পষ্ট ঘৃণার কথা। প্রায় এক বছর ধরেই সুশান্তের ওয়াল ভরে উঠেছে হুমকি, ঘৃণা, ক্ষোভ, প্রতিহিংসার আবহে। অথচ তার আগে এমনটা ছিল না। সেখানে তখন পোস্ট করা হত শুধুই প্রেমের কথা, ছবি, ভিডিয়ো। বছরখানেক ধরে সুশান্তের মনে অস্থিরতা চলছিল বলেই ধারণা তদন্তকারীদের।
সুশান্তের পরিবার থেকে প্রতিবেশী, সকলেরই দাবি, ওই যুবকের সঙ্গে সুতপার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় সুতপাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে সুশান্ত। সেখান থেকেই তদন্তকারীদের ধারণা, সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই হয়তো ফেসবুক ‘বায়ো’তে সুশান্ত ওই হুমকি দিয়েছিলেন। সুতপা বুঝতে পেরেছিলেন কি না, তা আর যদিও জানার উপায় নেই।
আরও পড়ুন- Higher Secondary Exam: এবার থেকে বছরে দু'দফায় উচ্চমাধ্যমিক, সেমেস্টার সিস্টেমের ভাবনা শিক্ষা সংসদের
শুধু তাই নয়, মৃত সুতপা চৌধুরীকে সে বিয়েও করেছিল বলেও পুলিশের কাছে দাবি করেছে ওই যুবক। জেরায় সুশান্ত জানিয়েছে, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সুতপাকে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল সে। তবে গত চার মাস ধরে সেই সম্পর্ক আর এগিয়ে নিয়ে যেতে সুতপা ইচ্ছুক ছিলেন না বলেও জেরায় জানিয়েছে সুশান্ত। সে আরও জানিয়েছে, অন্য কারও সঙ্গে সুতপার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। এর জেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল একসময়ের মেধাবী ছাত্র সুশান্ত।
সুশান্তের এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘ওদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে বেশ কিছু দিন ধরে মনে হচ্ছিল, এই সম্পর্ক থেকে বার হতে চাইছিল সুতপা। আমরা শুনেছি, সুশান্তের কাছ থেকে অনেক টাকাপয়সাও হাতিয়ে নেওয়া হয়। এক দিন সালিশি সভা বসিয়ে ছেলেটির কম্পিউটার থেকে অনেক ছবি মুছেও দেওয়া হয় আমাদের সামনে। তার পর থেকে আমরা সকলে এই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সুশান্তকে বুঝিয়েছিলাম। কিন্তু ও পারল না।’’