অনুব্রত কাণ্ডে পদে পদ তদন্তকারীদের জন্য বিস্ময় অপেক্ষা করছে। শুধু ব্যক্তিগত বাড়ি-গাড়ি-জমি নয়, এবার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘেরও প্রায় দেড় বিঘা জমি 'জোর' করে হস্তান্তরের অভিযোগ উঠল অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তদন্তকারীদের দাবি, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের জমি কোনও এক ‘জাদুবলে’ হস্তান্তরিত হয়েছে এমন এক সংস্থার নামে, যার অন্যতম ডিরেক্টর অনুব্রত-কন্যা। নথি বলছে, ওই জমি সুচিন্ত্যকুমার চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি জনসেবামূলক কাজের জন্য বীরভূমে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মুলুক শাখাকে দান করেছিলেন। সেই জমিই পরে কী ভাবে এক কোটি ষাট লক্ষ টাকায় হস্তান্তরিত হল, সেটাই তদন্তকারীদের কাছে ভাবনার বিষয়।
সিবিআই সূত্রের খবর, দানে পাওয়া একটি ট্রাস্টের জমি কী ভাবে হস্তান্তর হল, তা জানতে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্তকারীরা। তারাপীঠের কাছে মুলুক নামে ওই জায়গায় এই জমির দাম আকাশছোঁয়া। এএনএম অ্যাগ্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থা সেই জমি তুলনায় অনেক কম দামে কিনে নিয়েছে বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। দলিলে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের তরফে সই রয়েছে ওই শাখার সভাপতি স্বামী সঙ্ঘমিত্রানন্দের। আর এএনএম অ্যাগ্রোকেমের পক্ষ থেকে দলিলে সই করেছেন বিদ্যুৎবরণ গায়েন, যিনি আদতে অনুব্রতের বাড়িতে রাঁধুনির কাজ করেন বলে তদন্তকারীদের দাবি।
আরও পড়ুন- BJP : আজ থেকে বিলাসবহুল বৈদিক ভিলেজে শুরু হচ্ছে বঙ্গ বিজেপির চিন্তন শিবির
সিবিআই সূত্রের খবর, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কাছ থেকে এএনএম অ্যাগ্রোকেম জমিটি কিনেছিল ২০১৮ সালে এবং তা রেজিস্ট্রি করা হয় ২০২১-এ। রেজিস্ট্রেশন ফি দেওয়া হয় এক কোটি ষাট লক্ষ টাকা দামের ভিত্তিতে। সিবিআইয়ের দাবি, যেহেতু জমির দাম কম করে দেখানো হয়েছে, তাই কম পড়েছে রেজিস্ট্রেশন ফি-ও। এক আইনজীবী ওই সংস্থার প্রতিনিধি হিসাবে জমি রেজিস্ট্রি করেছেন।
প্রাথমিক তদন্তের পর সিবিআইয়ের অভিযোগ, সুচিন্ত্য ওই জমি দিয়েছিলেন গ্রামের পুরুষ ও মহিলাদের স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির কথা ভেবে। সেখানে ওই ধরনের কোনও কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ওই জমি যদি সঙ্ঘের তরফে সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হত, কিছু বলার ছিল না। কিন্তু বেসরকারি সংস্থার কাছে সেটি কী ভাবে বিক্রি হল? যে-জমি সঙ্ঘ বিনা পয়সায় পেল, সেই জমি বিক্রির টাকা কোথায় খরচ করা হয়েছে? উত্তর খুঁজছে সিবিআই।