রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের ফলে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাথমিক যে ফল প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দ্বিতীয় হিসাবে উঠে এসেছে বিজেপি। যদিও পাঁচ বছর আগের তুলনায় গ্রাম পঞ্চায়েতে গেরুয়া শিবিরের আসন সামন্য কমেছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু তার মধ্যে থেকেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে নন্দীগ্রামে বড় জয় ছিনিয়ে এনেছে বিজেপি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, বাসন্তী-সহ একাধিক এলাকায় এই পঞ্চায়েতেই প্রথমবার পদ্ম ফুটেছে। বীরভূমে মুখ্যমন্ত্রীর মামারবাড়ির পাড়াতেও গ্রাম পঞ্চায়েতে জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। আবার তারা জমি হারিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায়। যা সুকান্ত-শুভেন্দুদের কাছে কার্যত ধাক্কা বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের।
বিজেপির এই কাঁটা হয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট। এমনটাই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। কারণ, রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপির রক্তক্ষরণে বাম-কংগ্রেসই কাঁটা হয়েছে বলেই বারবার দাবি করা হয়েছিল। সেই ছবি এবার পঞ্চায়েতে। গ্রাম পঞ্চায়েতে জোটের আসন সংখ্যা টেক্কা দিচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। আবার তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়েছে হুগলি, বীরভূম, নদিয়া, পুরুলিয়ার মতো জেলায় সিপিএমের কামব্যাক। সাগরদিঘি পরবর্তী সময়ে কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ ছিল মুর্শিদাবাদ। কংগ্রেসকে নিজের জেলায় ফের অক্সিজেন দিয়েছেন অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সৌজন্যে মালদহেও কংগ্রেসের এখনও পর্যন্ত ভাল ফল হয়েছে।
তবে এই পঞ্চায়েতে রাজনৈতিক মহলের মতে চমক আইএসএফ। বিশেষ করে ভাঙড়ের অন্যতম আলোচিত এলাকা পোলেরহাট এলাকায় জমি রক্ষা কমিটির সঙ্গে জোট করে বাজিমাৎ করছে নওশাদ সিদ্দিকির দল। ওয়াকিবহাল মহলের মতে পোলেরহাট দু নম্বর ব্লকের তৃণমূলকে হারানোর পিছনে যত না আইএফএসের হাত, তার থেকে অনেক বেশি ফ্যাক্টর জমি রক্ষা কমিটির। কারণ, ওই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন এই কমিটির সদস্যরা। মূলত পাওয়ার গ্রিডের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন প্রশাসনকে আলোচনার টেবলে বসাতে বাধ্য করেছিল।
রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে গ্রাম বাংলার রায়ে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রাথমিক ভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতের যে ফল প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বিরোধী হিসাবে বিজেপি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন জয়ের নিরিখে বাম-কংগ্রেস জোটের যোগফল কিন্তু গেরুয়া শিবিরকে টেক্কা দিচ্ছে।
বিশেষ করে পাঁচ বছর আগের সঙ্গে এবারের ফারাক বেশ স্পষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে হুগলি, নদিয়ার একাংশ, পুরুলিয়ায় ভাল ফল করেছে বামেরা। আবার একদা নিজেদের গড় বলে পরিচিত মালদহ ও মুর্শিদাবাদে তৃণমূল স্তরে নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে কংগ্রেস। সাগরদিঘি পরবর্তী সময়ে যা ছিল কংগ্রেসের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।