বি.টি রোড । সিঁথির মোড় । রাস্তায় গোল হয়ে বসে, কেউ দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা । আর তাঁদের মাঝখানে মধ্যমণি হয়ে দাঁড়িয়ে এক পুলিশ আধিকারিক । তাঁকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পড়ুয়ারা । উঠছিল স্লোগান, 'পুলিশ তোমায় ধিক্কার, ধিক ধিক ধিক্কার'। ভোর চারটে থেকে সিঁথির মোড়ের ছবিটা এরকমই ছিল । ফলে বরাহনগর এলাকায় বিটি রোড কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল । গাড়ি, বাস কিছু মিলছিল না । সমস্যায় পড়েছিলেন নিত্যয়াত্রীরা । অবশেষে সাড়ে চার ঘণ্টা পর অবরোধ উঠল । জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার ও ওই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে । ওই এফআইআর-এর কপি হাতে পাওয়ার পরই অবরোধ তুলে নেন পড়ুয়ারা ।
কেন এই বিক্ষোভ ?
জানা গিয়েছে, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে সিথির মোড় এলাকায় এক কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে প্রাক্তনীরা । রাস্তায় স্লোগান লিখে প্রতিবাদ দেখান তাঁরা । রাস্তার একদিক ব্যারিকেড করে পথনাটিকাও চলছিল । কর্মসূচিটা ছিল রাত ১১টা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত । শান্তিপূর্ণভাবেই প্রতিবাদ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা । কিন্তু, ঝামেলা বাঁধে ভোর তিনটে, সাড়ে তিনটে নাগাদ । যখন তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি প্রায় শেষের পথে, সেইসময় একটি বাইক পড়ুয়াদের ব্যারিকেডে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ । পড়ুয়াদের অভিযোগ, ওই বাইকে যিনি ছিলেন, তিনি সিভিক ভলান্টিয়ার । গাড়িতে লেখা ছিল পুলিশ । সেইসময় ওই সিভিক মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে অভিযোগ । তাঁকে পড়ুয়ারা ঘিরে ধরতেই হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেন । কিন্তু, পড়ুয়াদের অভিযোগ, তিনি কথা বলার মতো অবস্থাতেই ছিলেন না । সেইসময় হঠাৎ এক পুলিশ কর্মী আসেন । আর সেখান থেকে এই সিভিক ভলান্টিয়ারকে পালাতে সাহায্য করেন বলে অভিযোগ । এতে পড়ুয়াদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায় । তারপর ওই পুলিশ কর্মীকে ঘিরেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা ।
রবীন্দ্রভারতীর এক পড়ুয়া জানিয়েছেন, "ভোর ৩.৫৫ মিনিট থেকে আমরা ওই পুলিশকর্মীকে আটকে রেখেছি। আমাদের দাবি, ওই সিভিককে এখানে নিয়ে আসতে হবে এবং আমাদের সামনে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।" পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি ।
এদিকে, দীর্ঘক্ষণ ধরে বিটি রোড আটকে থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে । ডানলপের দিক থেকে শ্যামবাজারের দিকে যাওয়ার রাস্তা কার্যত বন্ধ । সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা । বাস না পেয়ে অনেকেই মেট্রো ধরছেন । শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত, পরিস্থিতি একই রয়েছে ।