লোন নিয়ে গাড়ি (Loan) কিনেছিলেন। সেই গাড়ি কেনার ২০ দিন পর মর্মান্তিক পরিণতি যুবকের। গাড়ির শোরুমের মধ্যেই উদ্ধার হয় মৃতদেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত যুবক সাদ্দাম হোসেন বারাসতের (Barasat) ছোট জাগুলিয়ার বাসিন্দা। সম্প্রতি নৈহাটির এম এস বাজাজের (MS Bajaj) একটি শোরুম থেকে একটি বাইক কেনেন তিনি। সেখানেই মৃত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নৈহাটি থানার পুলিশ। ঘটনায় শোরুমের মালিক রোহন সিং সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে নৈহাটি থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, এই শোরুম থেকে ২০ দিন আগে কেটিএম-এর (KTM Bajaj) একটি বাইক নেন সাদ্দাম। ডাউন পেমেন্টে বাবদ ৪৫ হাজার টাকার একটি চেক দেন তিনি। কিন্তু সেই চেক বাউন্স করে। এরপরই গত মঙ্গলবার শোরুমে ডাকা হয় সাদ্দামকে। পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে মানসিক হেনস্থা, পরে মারধর করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে সাদ্দামকে। পরিবার ও বন্ধুদের অভিযোগ, শোরুমে বসেই বন্ধুদের ফোন করে সাদ্দাম। তিনি জানান, টাকা না পেলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। বুধবার সন্ধ্যায় নৈহাটি থানার পক্ষ থেকে ফোন করা হয় সাদ্দামের পরিবারকে। বলা হয়, সাদ্দাম শোরুমের মধ্যে আত্মঘাতী হয়েছেন। বাইকের শোরুমের বাথরুম থেকে তার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও তাদের বক্তব্য মানতে নারাজ পরিবার। পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে সাদ্দামকে।
আরও পড়ুন: শক্ত স্টেপিং সহজেই রপ্ত! দেব-রুক্মিণীর সঙ্গে নাচে মাতলেন মহারাজ,
সাদ্দাম হোসেনে জামাইবাবু জানান, "সাদ্দাম হোসেন নৈহাটি এমএস বাজাজ থেকে একটা বাইক নিয়েছিল। বাইক নিতে গিয়ে একটি চেক গিয়েছিল। চেকটা কোনও কারণবশত বাউন্স হয়ে যায়। শোরুম থেকে বারবার ওকে ডাকা হয়। ও জানায়, দুদিন পরে আমি আসছি। গতকাল নৈহাটিতে আসে ও। ওরা বলে, তোমার বাউন্স হয়ে গেছে। টাকা এই মুহূর্তে দিতে হবে। না হলে ছাড়া হবে না। ও বলে আমাকে সময় দিন, আমি টাকা দিয়ে দিচ্ছি। ও আমাদের ফোন করে। ফোন করার পর ওর বাবাকে জানিয়ে সেটলমেন্ট করতে এসেছিলাম শোরুমে। ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দিয়ে দেব।এসে দেখি, লাশটা হাসপাতালে রয়েছে। শোরুমের লোকজন মেরে গলায় দড়ি দিয়ে টানিয়ে দিয়েছে।"
দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মেরে ঝোলানো হয়েছে, নাকি ঝুলেই মৃত্যু, তা তারপরই স্পষ্ট হবে। পরিবারের অভিযোগের পর ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, সাদ্দামের টি শার্ট দিয়েই গলায় ফাঁস লাগানো ছিল। শরীরের বাইরে আঘাতে কোনও চিহ্ন নেই।
গতকাল সন্ধেবেলা শোরুমের বেশ কয়েকজন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জানা যায়, গতকাল দুপুরে খাওয়া শেষ করে শোরুমের বাথরুমে যান তিনি। দীর্ঘক্ষণ না বেরোলে কর্মীরা ধাক্কা দিতে শুরু করেন। পুলিশের উপস্থিতিতে দরজা খোলা হয়। সেখানেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।