কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার পর এবার হুগলি জেলাতেও তল্লাশি অভিযান শুরু করল ইডি। শুক্রবার সকালে হুগলির চন্দননগরের স্থানীয় পাদ্রিপাড়ার মেরিমাঠ সংলগ্ন বাড়িতে হানা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের একটি দল। জানা গিয়েছে, ওই বাড়িটি আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের শ্বশুরবাড়ি। কেন্দ্রীয়বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে চন্দননগরের ওই বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। তবে বাড়ি তালা বন্ধ ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপ ঘোষের শ্বশুরবাড়ির কোনও সদস্যই এখন এই বাড়িতে থাকেন না। বাড়ি তালা বন্ধ দেখে ফিরে যান ইডি আধিকারিকরা। এরপর বৈদ্যবাটি নার্সারি রোডে কুণাল রায়ের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি শুরু করে ইডি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়েই শঙ্করপল্লিতে কুণাল রায়ের বাড়িতে ঢোকেন আধিকারিকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুণাল কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযানে আসায় অবাক স্থানীয় বাসিন্দারাও।
উল্লেখ্য, এর আগে, শুক্রবার সকালেই আর জি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বেলেঘাটার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাতে গিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেটের একটি দল ! শুক্রবার সন্দীপের বাড়ি ঘিরে ফেললেন জওয়ানরা।
আরজি কর হাসপাতালে ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনায় হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। লাগাতার ১৬ দিন জেরার পর আর্থিক অনিয়মের অন্য একটি মামলায় সন্দীপকে গত সোমবার রাতে গ্রেফতার করে সিবিআই। মঙ্গলবার সন্দীপের ৮ দিনের সিবিআই হেফাজত হয়। অর্থাৎ সন্দীপ ঘোষ এই মুহূর্তে বাড়িতে নেই। এদিকে দরজা খুলছেন না বাড়ির অন্য কোনও সদস্য। অন্যদিকে হাওড়ার সাঁকরাইলে ভেন্ডর বিপ্লব সিংহর বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান করছে ইডি।
আরজি করের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বিপ্লব সিংহের দুর্নীতি সম্পর্কেও বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে সিবিআই এর। তাঁর পরিবারের অনেকের নামে নানা সংস্থা তৈরি করে রেখেছিলেন বিপ্লব। হাসপাতালের কোনও টেন্ডার বেরোলেই সেই সব সংস্থার নামে টেন্ডার জমা করা হত। এমনকি হাসপাতালের বহু কর্তাকে কাগজ না দেখিয়েই তাঁদের নামে এই সব সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হত বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আর্থিক অনিয়মের মামলায় সন্দীপের পাশাপাশি দুই ভেন্ডর বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। জানা গিয়েছে এক মেডিক্যাল সাপ্লায়ারের কাছ থেকে হাসপাতালের সোফা সেট এবং রেফ্রিজারেটর কিনেছিলেন সন্দীপ! CBI সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে যে রিমান্ড লেটার জমা দিয়েছে, তাতে স্পষ্টই উল্লেখ রয়েছে তা, হাজরা মেডিকেল নামের ওই সংস্থার মালিক সুমন হাজরা।