বর্ষা এসে গিয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গে ঢুকবে বর্ষা। এরমধ্যেই শুরু ইলিশের মরসুম। বাঙালির রসনা তৃপ্তি করতে ইতিমধ্যে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে সাগর মোহনায় পাড়ি জমিয়েছে কয়েক হাজার ট্রলার। মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে ১৪ এপ্রিল থেকে ১৫-ই জুন পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতেই গভীর সমুদ্রে এবার ইলিশ অভিযান।
গত কয়েক বছরের আর্থিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে রুপোলি শস্যের খোঁজে বঙ্গোপসাগরে পাড়ি জমালেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীরা। দিনভর দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভিন্ন গুলিতে প্রস্তুতি চলেছে পুরোদমে। ঘাটে-ঘাটে ও ট্রলারে-ট্রলারে হয়েছে গঙ্গাপুজো। বহু ট্রলার গঙ্গাপুজো সেরেই মাছ ধরার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়।
মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ছোট-বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৪,০০০ ট্রলার রয়েছে। অর্ধেক ট্রলার মরসুমের শুরুতে সমুদ্রে পাড়ি দেবে। গত কয়েক বছরে ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে বহু আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখে এবার প্রথম যাত্রার পরে দেখা হবে কেমন ইলিশ উঠল, তার পরিমাণ। তারপর, সেই অনুযায়ী, বাকি অর্ধেক ট্রলার সমুদ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রলার মালিকেরা।
প্রত্যেকটি ট্রলারে থাকবেন ১৫ জন। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে। ইতিমধ্যে সাগর মোহনায় পাড়ি দিয়েছে বহু মৎস্যজীবী ট্রলার। বেশ কয়েক বছর ইলিশ না পাওয়ায় চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ট্রলার মালিকেরা। এবার আশা করছি ভাল ইলিশ হবে।
পাহাড়ের মিষ্টি জল যখন সাগরের মোহনার দিকে আসে , তখন ইলিশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে কার্যত হিমশিম ট্রলার মালিকেরা। মৎস্যজীবী দেবাংশু দাস জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে সাগরে ইলিশ মিলছে না। আস্তে আস্তে ট্রলার ব্যবসা বন্ধের মুখে। এই বছর আশায় বুক বেঁধে আবার ইলিশ ধরতে পাড়ি দেবেন তাঁরা।