হাঁসখালিতে নাবালিকা ধর্ষণ মামলায় অবশেষে গ্রেফতার করা হল তৃণমূল নেতা সমর গোয়ালার ছেলে মূল অভিযুক্ত ব্রজগোপাল গোয়ালাকে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, খুন-সহ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পকসো আইনেও মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ১২ ঘণ্টার হাঁসখালি বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। রাণাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের অভিযোগ, প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ছেলেকে আড়াল করতে আগে থেকেই নাবালিকার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের পাল্টা দাবি, মেয়ের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে ব্রজগোপালকে।
গত সোমবার ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। সোমবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। এর পর চাইল্ড লাইনের সহযোগিতায় নির্যাতিতার পরিবার ঘটনার চার দিন পর অর্থাৎ শনিবার অভিযোগ দায়ের করতে সমর্থ হয়। ধৃত ব্রজগোপালের বিরুদ্ধে গত শনিবার হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নির্যাতিতা নাবালিকার বাবা এবং মা। রবিবার সকালে ব্রজগোপালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ব্রজগোপালের বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে। এর পর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে শনিবার রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই বেপাত্তা ব্রজগোপালের বাবা তৃণমূল নেতা সমর। দেখা মিলছে না তাঁর পরিবারেরও।
শুধু তাই নয়, কেরোসিন ঢেলে দাহ করা হয় নির্যাতিতার দেহ। পাশাপাশি প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টাও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, ধর্ষণের জেরে অত্যধিক রক্তপাতে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় শ্মশানে দাহ করা হয় ওই নির্যাতিতা কিশোরীর দেহ। ওই দাহকার্যে যে শ্মশানকর্মী যোগ দিয়েছিলেন ঘটনার পর থেকে তাঁর আর খোঁজ মিলছে না। পুলিশও তাঁর সন্ধান করছেন। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তড়িঘড়ি দাহ করতে নির্যাতিতার চিতায় কেরোসিন তেল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল।
বগুলার ওই নাবালিকার পরিবার অতি সাধারণ। বাবা পেশায় দিনজুর। মেয়ে স্থানীয় স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গত সোমবার নদিয়ার হাঁসখালি এক নম্বর ব্লকের গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামনগর এলাকার বাসিন্দা ব্রজগোপাল গোয়ালার বাড়িতে জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দিতে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। ব্রজগোপালের বাবা সমর গোয়ালা গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতেরই তৃণমূল সদস্য। কিন্তু সেখান থেকে ‘অসুস্থ’ অবস্থায় ফেরে ওই নাবালিকা।
মৃত নাবালিকার বাবার কথায়, ‘‘মেয়ে মায়ের কাছে সব বলেছে। ও খালি বলছিল, ‘পেটের যন্ত্রণা করছে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।’ আমরা রাতের বেলা গ্রামের এক জন সাধারণ ডাক্তারের কাছে যাই। ওষুধ নিয়ে বাড়ি এসে দেখছি মেয়ে আর নেই।’’
আরও পড়ুন- Rampurhat : বগটুই-কাণ্ডে গ্রেফতার আরও এক, সমীর শেখকে গ্রেফতার করল সিবিআই