'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার', হিংসা, হানাহানি, বিভেদের সমাজে এযেন একটুকরো সম্প্রীতির ছবি। ভাঙরের কাশিপুর গ্রামের কালী পুজোয় দেখা যায় এক অনন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির। কবে থেকে এই পুজোর প্রচলন জানা যায় না, কিন্তু শোনা যায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে কাশিপুরের এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সেই থেকেই নিষ্ঠাভরে পুজো-যজ্ঞ হয়। এই অঞ্চলে পুজোর প্রস্তুতি থেকে ভোগ বিতরণ সমস্তটাই করেন হিন্দু- অহিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। জাত ধর্ম নির্বিশেষে তারা মেতে ওঠেন আনন্দে। গভীর রাতে পুজো শেষে খিচুড়ি ভোগ খান আমজনতা। ভোর পর্যন্ত চলে সেই ভোগ বিতরণ।
কাশিপুর মন্দির কমিটির প্রধান কর্তা গৌতম কর্মকারের দাবি, "পূর্বপুরুষরা রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে ভাঙড়ের কাশীপুরে এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে তাঁদের এক পূর্ব পুরুষ এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন।প্রথম দিকে মাটির ঘর আর খড়ের চাল থাকলেও একশো বছর আগে কংক্রিটের নতুন মন্দিরে মায়ের অধিষ্ঠান হয়েছে।" কাশীপুর সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এখানে পুজো দিতে আসেন। স্থানীয়দের মতে এই কালী খুব জাগ্রত। মানত করলে মা ফেরান না।
আরও পড়ুন: Kali Puja 2022: আলোর উৎসবে অপরাধ আটকাতে মোতায়েন সাড়ে চার হাজার পুলিশ, নজরে বাজি বাজারও
মন্দিরের পুরোহিত বিজকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘অমাবস্যার রাতে প্রথা মেনে ছাগবলি হয়। খিচুড়ি ভোগ বিতরণ হয় সারা রাত ধরে।গত বছর এখানে দু হাজার মানুষ পাত পেড়ে খিচুড়ি খেয়েছিলেন।এবছর লোকসংখ্যা আরও বাড়বে।‘ এলাকার যুবক মান্নান মোল্লা,ইসমাইল মোল্লা, নূরইসলাম মোল্লারা বলেন, ‘পুজোর দিন অনেক রাত পর্যন্ত আমরাও জেগে পুজো উপভোগ করি, প্রসাদ খাই।‘ ভাঙরের এই মন্দির যেন সম্প্রীতির পীঠস্থান।