সোমবার গ্রেফতার হন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। কিন্তু তার আগে তাঁকে নিয়ে সারারাত ধরে যে নাটক চলল, তার আন্দাজ করেননি কেউই। দিনভর তাঁকে জেরার মাঝেই রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আচমকাই বিধায়কের বাড়ির নিরাপত্তা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত চারজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান সেখানে হাজির হতেই বিধায়কের গ্রেফতারি নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়। রাত ১টা নাগাদ এর সঙ্গেই যুক্ত হয় রাজ্য পুলিশ। রাত আড়াইটে নাগাদ জীবনের বাড়ি যান সিবিআইয়ের আরও চার আধিকারিক। তারপরই তাঁকে গ্রেফতারির প্রস্তুতি শুরু হয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে আসে আরও দু'গাড়ি কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাত ৩টে নাগাদ বিধায়ককে শেষবারের মতো জেরা করেন গোয়েন্দারা। ভোর ৪টে নাগাদ বিধায়কের মা এবং স্ত্রীকে ডেকে পাঠান গোয়েন্দারা। তাঁদের গ্রেফতারের পদ্ধতি বুঝিয়ে দেয় সিবিআই। ৪টে ৫০ মিনিট নাগাদ অ্যারেস্ট মেমোতে সই করেন জীবনের স্ত্রী টগরি সাহা। সোমবার ভোর ৫টা নাগাদ তৃণমূল বিধায়ককে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা। তাঁকে নিয়ে ৬টি গাড়ির কনভয় রওনা দেয় কলকাতা। দুর্গাপুরে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে বলে খবর। এরপর ফের নিজাম প্যালেসের উদ্দেশে রওনা দেবে সিবিআই কনভয়।
আরও পড়ুন- Maharashtra News: চড়া রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে দর্শক, মহারাষ্ট্র সরকারের অনুষ্ঠানে এগারোজনের মৃত্যু
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সিবিআই-এর একটি দল জীবনকৃষ্ণের বড়ঞার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি দল। তল্লাশি চালানো হয় তাঁর অফিস-সহ একাধিক জায়গায়। সিবিআই সূত্রে খবর, তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে তাঁর সুপারিশে হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের নথির পাশাপাশি এসএলএসটির গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার ডেটাবেসই পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দু’বস্তা নথি, যেখানে রয়েছে প্রায় ৩,৪০০ প্রার্থীর তথ্য।
সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তাঁর ঘর থেকে একাধিক কম্পিউটার, বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ, তিনটি নোটপ্যাড, হাই স্পিড ইন্টারনেট সংযোগ এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু সফ্টওয়্যারের খোঁজ পাওয়া যায়। কী কাজে এই ঘর ব্যবহার হত, সে বিষয়ে বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একটি সিঁদুর কৌটোর মধ্যে জীবনকৃষ্ণ মোবাইলের মেমরি কার্ড লুকিয়ে রেখেছিলেন বলেও সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।