নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেন RG কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। সোমবার শিয়ালদহ আদালতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। তারপর তাকে প্রিজম ভ্যানে তোলার সময় চিৎকার করে ওই দাবি করেন অভিযুক্ত। তাঁর দাবি, সরকার তাঁকে ফাঁসিয়েছে। তাঁর কোনও কথা শোনা হচ্ছে না।
শিয়ালদহ আদালতে ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হওয়ার পর জানিয়ে দেওয়া হয়, ১১ নভেম্বর থেকে ওই মামলার শুনানি শুরু হতে চলেছে। দৈনিক মামলাটির শুনানি চলবে। এবং অতি দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে দোষীর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
আদালত সূত্রে খবর, শিয়ালদহ আদালতের ভিতরেও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। বিচারকের সামনেই সে বারবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। বড়সড় চক্রান্ত করা হয়েছে বলেও দাবি তাঁর।
কী বলেছে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার?
আদালত থেকে বের করে প্রিজম ভ্যানে তোলা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারকে। সেইসময় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার বলেন, "আমি এতদিন চুপচাপ ছিলাম। কিন্তু ধর্ষণ এবং খুন করিনি। আমার কথা কেউ শুনছে না। সরকার আমাকে ফাঁসাচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তুমি কিছু বলবে না। আমার ডিপার্টমেন্টও আমায় ভয় দেখিয়েছে। আমি নির্দোষ।"
গত ৯ অগাস্ট সকালে RG কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার করা হয় মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ। অভিযোগ, তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে। সেই ঘটনার তদন্তভার যায় CBI-এর হাতে। ঘটনার ৮৭ দিন পর এবং CBI-এর চার্জশিট পেশের ২৮ দিনের মাথায় চার্জ গঠন সম্পন্ন হল।
এদিকে চার্জ গঠনের আগে সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে চার্জশিটে ১১টি প্রমাণ দিয়েছে CBI। কোন কোন বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে?
- ৯ অগাস্ট ভোরে RG কর হাসপাতালের চারতলায় দেখা গিয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ারকে।
-ঘটনার দিন রাতে হাসপাতালেই ছিল অভিযুক্ত। টাওয়ার লোকেশন থেকে সেই প্রমাণ মিলেছে।
-ময়না তদন্তের সময় মৃতের শরীর থেকে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের DNA মিলেছে
-ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া চুলের সঙ্গে অভিযুক্তের চুল মিলে গিয়েছে।
-অভিযুক্তের ব্লু-টুথ হেডফোনের টুকরো উদ্ধার করা হয় RG কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে। এর থেকে পরিষ্কার ঘটনার দিন রাতে সেমিনার রুমে ছিল ধৃত।
-ধৃতের শরীর থেকে ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। যা ঘটনার দিন রাতেই হয়েছিল। ডাক্তারি পরীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
-অভিযুক্তের শরীরে ক্ষতচিহ্ন সেগুলি নির্যাতিতার প্রতিরোধের ফলেই তৈরি হয়েছিল। এমনই তথ্য রয়েছে মেডিক্যাল রিপোর্টে।
-ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার যে সঙ্গমে অক্ষম এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি।
-মৃতার অন্তর্বাসের সেলাই যেভাবে ছেঁড়া হয়েছিল তাতে বোঝা গিয়েছিল জোরজবরদস্তি খোলা হয়েছে।
-নিহত চিকিৎসকের কুর্তির দুপাশ ছেঁড়া ছিল। ঘটনাস্থল থেকে যে বীর্য এবং লালরস পাওয়া গিয়েছিল তা সিভিক ভলান্টিরের।