'দাদু'-র কাছে ঠাকুর দেখার আবদার করেছিলেন 'নাতনিরা'। সে আবদার কি আর ফেলতে পারেন 'দাদু' । তাই ৫০ জন খুঁদে 'নাতনি'-কে নিয়ে পুজোয় ঘুরে বেরালেন, ঠাকুর দেখলেন । যদিও, এই দাদু-নাতনিদের মধ্যে কোনও রক্তের সম্পর্ক নেই । তবে, ভালবাসা আছে...একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে । যা রক্তের সম্পর্কের থেকে অনেক বড় ।
এই 'দাদু' হলেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ । আর জলপাইগুড়ির এক হোমের ছোট ছোট বাচ্চারা তাঁর 'নাতনি'। কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও জলপাইগুড়ির ওই হোমে নিয়মিত যান দুলাল দেবনাথ । হোমের বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেন, হাসি ঠাট্টা করেন, নিয়মিত খোঁজ নেন তাঁদের । হোমের শিশুদের কাছে তিনি খুব প্রিয় একজন মানুষ । তাই, তারা দুলালবাবুকে ভালবেসে দাদু বলে ডাকে ।
গত দু বছর করোনার প্রভাবে পুজোয় সেভাবে আনন্দ করতে পারেনি হোমের খুদেরা । তবে, এবার আর আনন্দে কোনও 'করোনা' বাধা নেই । তাই, এবার তারা দাদুর কাছে বায়না ধরেছিল, পুজোয় পুরো একটা দিন তাদের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে পুজো দেখাতে হবে । একসঙ্গে এতজন 'নাতনি'-র আবদার ফেরাতে পারেননি দুলাল বাবু । তাই, সপ্তমীর দিন একটি বাসে করে হোমের সব আবাসিকদের নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েন তিনি ।
এদিন, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার বিভিন্ন পুরাকীর্তি ও আশ্রমে যান তাঁরা । ময়নাগুড়ি ব্লকে অবস্থিত জল্পেশ মন্দির ,জটিলেশ্বর মন্দির ঘুরিয়ে দেখান দুলালবাবু । সেখানে পুজো দেন । ভোগ খান । এরপর ফের বাসে করে কোচবিহার জেলার নিগমানন্দ আশ্রমে যান তাঁরা । সেখানে খুদেরা নাচ-গানের মধ্যে আনন্দে মেতে ওঠে ।
হোমের সুপার ডালিয়া মিত্র বলেন, "জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দুলাল বাবু নিয়ম করে সকাল বিকাল আমাদের হোমে আসেন । বাচ্চাদের খোঁজ নেয় । তারাও দুলাল বাবুকে দাদু বলে ডাকে । তাই তারাই এবার ঠাকুর দেখানোর বায়না ধরেছিল । দুলাল বাবুও রাজি হয়ে যান । তাই আজ তিনি ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যান। আজ খুব আনন্দ করেছে ওরা ।"
এপ্রসঙ্গে দুলাল দেবনাথ বলেন, "এই নিয়ে বেশ কয়েক বার বাচ্চাদের নিয়ে বেরোলাম । ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে খুব ভাল লাগে । এবার বাংলাদেশের এক আবাসিককেও নিয়ে গেলাম । পুজো দেখে তার খুব ভাল লেগেছে ।"