ঝালদার (Jhalda)নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর (Tapan Kandu Murder Case) খুনের প্রত্যক্ষদর্শীর রহস্যমৃত্যু (Eye Witness Hanging body) । বুধবার সকালে ঘর থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় । মৃতের নাম নিরঞ্জন বৈষ্ণব । তাঁর মৃতদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে । তপন কান্দুর খুনের পর থেকে দিনের পর দিন মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন নিরঞ্জন । সুইসাইড নোটে এমনটাই লেখা রয়েছে ।
মৃত নিরঞ্জন বৈষ্ণব পেশায় শিক্ষক । পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন সকালে তিনি টিউশন পড়াতেন । কিন্তু, এদিন সকাল থেকেই তাঁকে দেখা যায়নি । ছাত্ররা এসে বারবার তাঁর ঘরের দরজায় ধাক্কা দেয় । কিন্তু, কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি । এরপরই সন্দেহ হয় পরিবারের । তাঁরা ডাকতে গিয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখেন ঘরের মধ্যে ঝুলছে তাঁর নিথর দেহ । খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ঝালদা থানার পুলিশ । পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় এলাকার বাসিন্দারা ।
তপন কান্দুকে বহুদিন ধরেই চিনতেন নিরঞ্জন বাবু । তপন কান্দুর সান্ধ্যকালীন ভ্রমণের সঙ্গী ছিলেন তিনি । যেদিন তপনবাবু খুন হন, সেদিন সঙ্গেই ছিলেন নিরঞ্জন । চোখের সামনে খুন হতে দেখেছিলেন তপনকে । তাই তপন খুন হওয়ার পর থেকেই নিরঞ্জনবাবুকে বারবার তাঁকে ডেকে নিয়ে যেত পুলিশ । পুলিশ মানসিক চাপ দেওয়াতেই তিনি এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি পরিবারের ।
যদিও সুইসাইড নোটে ওই ব্যক্তি উল্লেখ করেছেন, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় । তপনের মৃত্যুর পর থেকে তিনি ঠিক করে রাতে ঘুমাতে পারছিলেন না, খেতে পারছিলেন না । মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন । তার উপর বারবার পুলিশ ডেকে পাঠাচ্ছিল । তিনি জানিয়েছেন, তিনি কোনওদিন থানার চৌকাঠ পেরোননি । তিনি আর সহ্য করতে পারছিলেন না । তাই স্বেচ্ছায় এই পথ বেছে নিয়েছেন ।
সোমবার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে সিবিআই তদন্তের(CBI Investigation) নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট(Kolkata High Court)। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চের নির্দেশ, ৪৫ দিনের মধ্যেই তদন্ত শেষ করে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে হবে । আদালতের নির্দেশ, অভিযোগকারী এবং মানুষের মনে আস্থা ফেরানোর জন্য তদন্ত করবে সিবিআই ।
এ দিকে, বুধবার সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার বনধ শুরু হয়েছে ঝালদায় । তপন কান্দুর স্ত্রীকে হেনস্থা করার প্রতিবাদে বনধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস । চলছে পথ অবরোধ । বনধকে কেন্দ্র করে রাস্তায় বেরিয়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা । বনধের প্রভাব পড়েছে ঝালদার সর্বত্র ।