ঢেউ খেলানো চা বাগান । আরও একটু উপরে উঠলেই মেঘেদের আনাগোনা । তার ফাঁকেই উঁকি মারে পাহাড়ের সারি । চোখ ধাঁধানো সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাক্ষ্মী থাকতেই মানুষ ছুটে যায় পাহাড়ে । আর বাঙালির কাছে হাতের মুঠোয় পাহাড় মানেই দার্জিলিং । গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা কিংবা শীত, পাহাড়ে সবসময়ই পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে । সামনেই যেমন দুর্গাপুজো । পুজোর ছুটি কাটাতে অনেকেই পাহাড়ের যাওয়ার জন্য টিকিট কেটে ফেলেছেন । কিন্তু, পুজোর আগে টানা ভারী বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত পাহাড় । ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাস্তায় ধস নেমেছে । ফুঁসছে তিস্তা । ভেঙে পড়েছে বাড়ি-ঘর । তিস্তাপারের বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে রাজ্য প্রশাসন ।
বৃহস্পতিবার থেকে পার্বত্য এলাকায় টানা বৃষ্টি চলছে । গত তিনদিন ধরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়িতে । টানা চার দিনের বৃষ্টিতে জল বাড়ছে তিস্তায় । বিপজ্জনক পরিস্থিতি ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের । সিকিমের রংপুর থেকে সিংথাম যাওয়ার মাঝে বেশ কিছু জায়গায় ধসের কারণে দশ নম্বর জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । বন্ধ রাখা হয়েছে জাতীয় সড়ক । ধস নেমেছে দার্জিলিং ও কালিম্পং যাওয়ার রাস্তায় । বেশ কিছু জায়গায় ধস সরানোর কাজ চলছে।
কালিম্পং জেলার সিংথাম-রংপো রোডে পাহাড় থেকে বোল্ডার নেমে এসেছে । যার ফলে একাধিক রাস্তা বন্ধ রয়েছে । অন্যদিকে, মিরিকের থরবো এলাকায় ধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি । ইতিমধ্যে একটি বাড়িও ভেঙে পড়ে । মিরিক প্রশাসনের পক্ষ থেকে গৃহস্থদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।
শুক্রবার সকাল থেকেই পাহাড়ে বৃষ্টি চলছে । কখনও ভারী, কখনও মাঝারি বৃষ্টিতে ভিজছে পাহাড় । বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে দার্জিলিংয়ে ম্যাল রোডে ঘুরতে দেখা গিয়েছে পর্যটকদের । আবার টানা বৃষ্টির জেরে অনেকেই হোটেল বন্দী । ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন দোকানদাররা ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টি চলবে পাহাড়ে । আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়িতে । কোচবিহারে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে । পাহাড়বাসীকে সতর্ক করে দিয়েছে প্রশাসন । নিরাপদ স্থানে সরে আসারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।