ডিজিটাল যুগেও মহালয়ার (Mahalaya 2022) ভোরে বাঙালি মজে রেডিওতেই। মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরে 'বাজল তোমার আলোর বেণু' শোনার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় বাঙালির দুর্গাপুজো। কারণ আকাশবাণী থেকে সম্প্রচারিত 'মহিষাসুরমর্দিনী' অনুষ্ঠানের এই চেনা স্তুতিই মনে করিয়ে দেয় বাঙালির শিকড়ের টান। বাঙালির দুর্গা পুজো। কাশ ফুল আর শরতের পেঁজা তুলোর মতো আকাশটাকে।
সারা বছর কদর না থাকলেও এই মহালয়ার সকালে প্রাণ ফিরে পায় বাড়ির এক কোণে পড়ে থাকা জরাজীর্ণ রেডিও। কারণ ওটা ছাড়া যে বাঙালির পিতৃপক্ষের অবসান আর দেবীপক্ষের সূচনা হয় না। আর তাই মহালয়ার প্রাককালে ধুলো ঝেড়ে চকচকে হয়ে উঠছে রেডিও। কেউ আবার বাড়ির কোনে পড়ে থাকা ধুলো মাখা রেডিও মেরামত করতে দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। কেউ আবার শুধুমাত্র মহালয়ার জন্য নতুন রেডিও কিনে বাড়ি ফিরছেন। কেউ বা পুরানো রেডিও সচল করতে ব্যটারি কিনছেন।
প্রতিবছরের মতো এই বছরও মহালয়ার আগে একই ছবি ধরা পড়েছে বিভিন্ন জায়গায়। লাইন পড়েছে রেডিও সারাই করতে। যদিও বিক্রেতাদের দাবি, রেডিওর কদর কমেছে। ফলে, বন্ধ হয়ে গিয়েছে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের একাধিক রেডিও মেরামতের দোকান। যে দোকানগুলি খোলা রয়েছে তাতেও আগের মতো ভিড় জমাচ্ছেন না ক্রেতারা। ইন্টারনেট স্মার্টফোনের যুগে বিক্রিও কমেছে রেডিওর।
তবে, কথায় আছে প্রাচীন স্মৃতি আঁকড়ে থাকতে ভালবাসে না বাঙালি। কিন্তু আজও রেডিওতে মহালয়া শোনার অনুভূতি বাঙালিকে হাজির করে রেডিও-র দোকানে। এক রেডিও মেরামতের শিল্পীর কথায়, 'আজকাল সেভাবে আর কেউ রেডিও শোনেন না। তাই আগের মতো মহালয়ার আগে রাত জেগে রেডিও সারাতে হয় না তাঁদের। কিন্তু কিছু প্রবীন মানুষ আজও মহালয়ার আগে রেডিও সারাতে ভিড় জমান দোকানে'।