বেশ ঠাণ্ডা পড়েছে কলকাতায়। সামনেই শীতের ছুটিও রয়েছে। এই সময়টা আশেপাশে পিকনিক করা কিংবা ঘুরতে যাওয়ার জন্য এক্কেবারে পারফেক্ট। বিশেষ করে এই সময় বাড়ির ছোটদের স্কুলে লম্বা ছুটি থাকে। তাই একবার ঘুরে আসতেই পারেন মিনি জু থেকে।
খুব কম সময়েই কলকাতার মানুষের বেশ পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে এই মিনি জু। যার পোশাকি নাম হরিণালয়। নিউ টাউনের ইকোপার্ক লাগোয়া ৬ নম্বর গেটের পাশেই রয়েছে এই চিড়িয়াখানা। ২০১৬ সালে হিডকোর দেওয়া ১৩ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে এই মিনি জু।
প্রথমদিকে জঙ্গলের মূল আকর্ষণ ছিল হরিণ এবং কুমির। বর্তমানে সেখানে জিরাফ, জেব্রা, ম্যাকাও, কালো রাজহাঁস সহ নানা রঙিন পাখিও রাখা হয়েছে। এই শীতে এবার এই জঙ্গলে পা রাখতে চলেছে বাঘের। নিউটাউন চিড়িয়াখানায় বাঘ, সিংহ আনার পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের। চলতি মাসেই জু-এর জৌলুস বাড়াতে চলেছে জোড়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।
শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্ক থেকে কলকাতায় আসতে চলেছে দুটি ১৫ মাসের বাঘ। ক্রিসমাসের আগেই তাদের কলকাতায় নিয়ে আসা হবে। বিশেষ গাড়িতে করে বাঘ দুটিকে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে। গাড়িতে রাখা থাকবে পর্যাপ্ত জল, খাবার। ব্যবস্থা থাকবে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের। নিরাপত্তা ও বাঘেদের তদারকি করার জন্য কয়েকজন কর্মীও থাকবেন।
তবে, শিলিগুড়ি থেকে নিয়ে এসেই সঙ্গে সঙ্গে মিনি জু-তে রাখা হবে না। প্রথমে তাদের নিভৃতবাসে রাখা হবে, পরিবেশ ও আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে। তারপর তাদের এনক্লোজারে দর্শকদের জন্য ছাড়া হবে। ক্রিসমাসের দিন এই এনক্লোজার উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ক্রিসমাসের মধ্যেই মিনি চিড়িয়াখানায় রাখা হবে বাঘ দুটিকে। ইতিমধ্যেই মিনি চিড়িয়াখানায় বাঘ দুটির বাসস্থান তৈরির কাজ প্রায় শেষ করে ফেলা হয়েছে। বাসস্থানের ৭০ শতাংশ খোলা জায়গা রাখা হচ্ছে। যাতে বাঘ দুটি বিনা বাধায় ঘুরেফিরে বেড়াতে পারে। লোহার বেড়ার একদিকে থাকবে বাঘ। অন্যদিকে, থাকবেন দর্শকরা।
খাচার বাইরে মোটা কাচ রাখা থাকবে। যাতে কচিকাঁচারাও সহজে বাঘমামাদের দেখতে পায়। লোহার বেড়ার মাঝে দেড় ফুটের মতো ফারাক রাখা থাকবে। যাতে কেউ খাঁচার কাছাকাছি যেতে না পারেন। খাঁচার উচ্চতাও যথেষ্ট থাকবে যাতে কেউ বাঘ দেখার জন্য খাঁচার উপর চড়ে না বসতে পারেন।
কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানার কিছুটা বিকল্প স্বাদ যাতে নিউটাউনে পাওয়া যায় সেজন্য সবরকমের চেষ্টা করছে রাজ্যের বন দফতর ও হিডকো কর্তৃপক্ষ।তা হয়েওছে। আলিপুরের পাশাপাশি কলকাতার উপকণ্ঠেই আরও একটি চিড়িয়াখানা চালু হয়ে যাওয়ায় তা দারুণ আকর্ষণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠতে খুব বেশি সময় লাগেনি।
ছুটির দিন কচিকাঁচাদের সঙ্গে নিয়ে অনেকেরই গন্তব্য এই চিড়িয়াখানা। এবার এই শীতে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে মিঠে রোদ মেখে দু-দুটো ডোরা কাটাকে দেখা যাবে কচিকাঁচাদের সামনে ঘুরঘুর করতে। সোমবার ছাড়া যে কোনও দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে গেলেই ঘুরে দেখা যাবে মিনি জু। প্রবেশ মূল্য মাত্র ৩০ টাকা।